কৃষি
দেশে এখন

কৃষিপণ্যের অপচয় ঠেকাতে কলার চিপস হচ্ছে বগুড়ায়

দেশে প্রতিবছর কৃষিপণ্যের অপচয়ের পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে আম, কলা, কাঁঠাল ও আলুর অপচয় প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। তবে অপচয় রোধে কাঁচা কলার চিপস তৈরি হচ্ছে বগুড়ায়। নেয়া হয়েছে আম ও কাঁঠালের চিপস তৈরির উদ্যোগ।

কাঁচা কলা ব্যবহার হয় মূলত সবজি হিসেবে। এখন কাঁচা কলা থেকে চিপস তৈরি করছেন বগুড়ার উদ্যোক্তারা। তাদের দাবি ভ্যাকুয়াম ফ্রাইং পদ্ধতিতে স্বল্প তাপমাত্রায় ভাজার ফলে তাদের চিপস যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়, তেমনি অক্ষুণ্ন থাকে পুষ্টিগুণ। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত প্রকল্পের আওতায় ৪ মাস ধরে বগুড়ার শিবগঞ্জের পীঠা হাড়িতলা এলাকায় তৈরি হচ্ছে এ চিপস।

একজন চিপস উৎপাদক বলেন, 'আমরা অলরেডি প্রশিক্ষণ পেয়েছি আলু এবং কলা দিয়ে চিপস তৈরি করার জন্য। এটা চালিয়ে যাচ্ছি। সামনে আমাদের আরও প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যকরভাবে আমরা তৈরি করছি। এটা খুব ভালো সারা পাচ্ছি। যারা এই চিপস খেয়েছে তারা রিপিট কাস্টমার হয়েছে আমাদের।'

একই পদ্ধতিতে কলার মতো আলু থেকেও চিপস তৈরি হচ্ছে এখানে। তবে বাজারে যা পাওয়া যায় তার থেকে স্বাদে ও মানে আলুর চিপসও ভিন্ন বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। চলতি মৌসুমে আম ও কাঁঠাল থেকে চিপস তৈরির উদ্যোগ আছে তাদের। ইতোমধ্যে বাজারে বেশ সাড়া ফেলেছে ভিন্ন স্বাদের এসব চিপস। চিপসের মাধ্যমে শিশুরা ফল ও সবজির পুষ্টিগুণ পাবে দাবি করে উদ্যোক্তারা বলছেন, এখন বিএসটিআই'র অনুমোদন, উন্নত মোড়কে বাজারজাতের প্রচেষ্টা চলছে।

একজন উদ্যোক্তা বলেন, 'আমরা এটা অনেকে বেশি পরিমাণে উৎপাদন করতে চাই। এক্ষেত্রে আমাদের বড় আকারের মেশিন দরকার। আমরা ফিডব্যাক ভালো পেলে এই চিপস দেশের বাইরেও পাঠাতে পারবো। '

অপচয় রোধ করে কৃষিপণ্যের সঠিক ব্যবহার করে ভোক্তাদের মুখে স্বাস্থ্যকর খাদ্য সামগ্রী তুলে দেয়ার ভাবনা থেকে এমন চিন্তা জানালেন- ফল ও সবজি থেকে চিপস তৈরির উদ্ভাবক।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রযুক্তি উদ্ভাবক ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, 'আমাদের মূল চেষ্টার একটা হচ্ছে অপচয় কমানো। আর একটা হচ্ছে খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করণে যুক্ত করা। এই চিপস অল্প তাপ এবং স্বল্প তাপে করা হয় বলে এটা সম্পূর্ণ রিাপদভাবে করা হয় যা স্বাস্থ্যের কোনো ঝুকিঁ তৈরি করবে না।'

দেশে কৃষিপণ্যে অপচয়ের পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে প্রতিবছর আম, কাঠাল, কলা ও আলুর অপচয়ের পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। কৃষি পণ্যের অপচয় রোধে বগুড়া ছাড়াও রাজশাহী, যশোর, সাতক্ষীরা, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, টাঙ্গাইল ও নরসিংদীতে গ্রুপভিত্তিক উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সিএসআর প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগ।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর