২০২৪ সালের ২৩ মে দেশের ফুটবলের জন্য আরও একটি কালো দিন। দুর্নীতি আর অনিয়মের দায়ে সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে বাফুফের ৫ কর্তাকে শাস্তি দিয়েছে ফিফা। তাদের মধ্যে আছেন বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মোর্শেদী। তাকে কোনো নিষেধাজ্ঞা না দিলেও প্রায় ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের ২ বছরের শাস্তির মেয়াদ শেষ না হতেই বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আরও ৩ বছরের নিষেধাজ্ঞাসহ ২৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছে তাকে। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নাম আছে আরও দুই সাবেক কর্মকর্তার। তাদের এমন শাস্তির বিষয়টি দেশের জন্য কলঙ্কজনক, এমনটাই বলছেন সাবেক ফুটবলাররা।
সাবেক ফুটবলার আবদুল গাফফার বলেন, 'একজন সংসদ সদস্য কী করে এ কাজগুলো করতে পারে! পুরো ক্রীড়াঙ্গনের জন্য দুঃখজনক। আমরা এর জন্য লজ্জিত।'
সাবেক ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলাম বলেন, 'পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করেই এ রায় দিয়েছে। জাতি এবং ফুটবলের জন্য এর থেকে কলঙ্ক আর হতে পারে না।'
গেল বছর আবু নাঈম সোহাগ প্রথমবার নিষিদ্ধ হওয়ার পর অধিকতর তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করেছিল বাফুফে। তদন্ত প্রতিবেদনে সোহাগ-আবু হোসেনদের দায়ী করা হলেও বেঁচে যান সালাম মোর্শেদী। এবার ফিফার তদন্তের জালে ধরা পড়লেন এই শীর্ষ কর্মকর্তাও। তাহলে বাফুফে গঠিত সেই তদন্ত কমিটির কার্যকারিতা কতটুকু?
আবদুল গাফফার বলেন, 'নাবিল আহমেদের উপর দায়িত্ব দিয়েছিল কিন্তু উনি প্রকাশ করেনি। এর পিছনের রহস্য কী? যদি উনি এটা প্রকাশ করতো তাহলে ফিফা থেকে এতো বড় ধাক্কা আমাদের খেতে হতো না।'
বেশ কয়েকবছর ধরে ছেলেদের ফুটবলে উল্লেখযোগ্য কোনো সাফল্য নেই। ২০ বছরেরও বেশি আগে সাফ জয়ের স্মৃতিতে যে মরিচা ধরে গেছে এতদিনে! তাছাড়া ফিফা বিশ্বকাপ প্রাক বাছাইয়েও আশানুরূপ ফল পেতে ব্যর্থ জামাল-মোরসালিনরা। অন্যদিকে নারীরা সাফ জেতার পর থেকে নিয়মিত প্রীতি ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়নি। আর সাবিনাদের বেতন পাওয়া-না পাওয়া নিয়েও সমালোচনা কম হয়নি। এরমধ্যে বাফুফে কর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার খড়গ। এমন উদ্ভট পরিস্থিতি সামলাতে বাফুফেতে সৎ-দক্ষ সংগঠকের প্রয়োজন বলে মনে করেন সাবেকরা।
শুনানি তথ্য বিশ্লেষণ, প্রমাণ উপস্থাপনের সুযোগ-এসব ধাপ শেষ করেই সালাম মোর্শেদী-আবু নাঈম সোহাগদের শাস্তি দিয়েছে ফিফার নীতি-নির্ধারণী কমিটি।