আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি

বাঁশের হস্তশিল্পে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের পরিবেশবান্ধব বাঁশের তৈরি হস্তশিল্পের চাহিদা ব্যাপক। শত বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পে কাজ করছেন স্থানীয় বেশ কয়েকটি গ্রামের দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি সহযোগিতায় ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা আয়েরও সুযোগ রয়েছে।

টাঙ্গাইল দেলদুয়ারের বর্ণী গ্রামের মো. নুরুন্নবী নামের এক উদ্যোক্তা পারিবারিকভাবে শিখেছেন বাঁশের তৈরি বিভিন্ন হস্তশিল্প তৈরির কাজ।

তার দাবি, উৎপাদিত হস্তশিল্পের পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে আয় করছেন বৈদেশিক মুদ্রা। সেই সাথে সরকারের সদিচ্ছায় বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ আর বিনামূল্যে মেশিন দেয়া হলে এ শিল্পে বড় একটি জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সম্ভব।

নুরুন্নবী বলেন, 'এখানে যদি আধুনিক প্রযুক্তি আসতো তাহলে ২-৩ হাজার মানুষ কাজ করতে পারতো। কোনো সমস্যা হতো না। তখন আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার যে ঘাটতি আছে সেটাও পূরণ হতো।'

এ শিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, উৎপাদিত বিভিন্ন হস্তশিল্প দেশের বড় বড় শপিং মলে সরবরাহ করেন তারা। এক সময় স্থানীয় বাঁশ দিয়ে চাহিদা মেটানো গেলেও বর্তমানে তা সম্ভব হচ্ছে না। বেশি দামে অন্য জায়গা থেকে বাঁশ কিনতে হয়। এখন ব্যবসার পরিধি বাড়াতে দরকার সরকারি সহযোগিতা।

পুুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সমান তালে কাজ করছেন

শত বছরের বেশি সময় ধরে দেলদুয়ারে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের হস্তশিল্পের কাজ করা হয়। বর্তমানে এ পেশার সাথে প্রায় দেড় হাজার মানুষ জড়িত। ছোট-বড় কারখানায় পুরুষের পাশাপাশি সমান তালে কাজ করছেন নারীরা। তবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও বাড়েনি এ কাজে শ্রমিকদের মজুরি।

যদিও বাঁশের এই হস্তশিল্প ও এর উদ্যোক্তাদের সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের জেলা কার্যালয়ে। তবে আবেদন করলে নিয়ম অনুযায়ী সহযোগিতার আশ্বাস তাদের। আর এই শিল্পে সরকারি সহায়তা পেলে বৈদেশিক মুদ্রা আয় সম্ভব বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

বিসিক জেলা কার্যালয়ের উপ-ব্যবস্থাপক শাহনাজ বেগম বলেন, 'আমাদের নীতিমালার মধ্যে পড়লে অবশ্যই আমরা তাদেরকে ঋণ সহায়তা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করবো।'

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. নাজমুস সাদেকিন বলেন, 'বিশ্ববাজারে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে যদি এর একটা বাজার তৈরি করে দেওয়া যায়। তাহলে ডলার আয় করা সম্ভব।'

এই হস্তশিল্পের পণ্যের উৎপাদনে নতুন নতুন ডিজাইনের ওপর প্রশিক্ষণ ও রপ্তানির ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম।

তিনি বলেন, 'পরামর্শ প্রদান ও আর্থিক অনুদান দেওয়া আমাদের প্রসিদ্ধ পণ্য প্রচার ও প্রসার কার্যক্রমের একটা অংশ। তারা যোগাযোগ করলে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।'

বংশ পরম্পরায় দেলদুয়ারের বর্ণী, প্রয়াগজানী, কোপাখীসহ বিভিন্ন গ্রামে হস্তশিল্পের কাজ হয়। বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয় বাস্কেট, টেবিল ল্যাম্প, ফলের ঝুড়ি, টিস্যু বক্স, গয়নার বাক্স, জানালার পর্দা, ওয়েস্ট পেপার ঝুড়িসহ নানা ধরনের সৌখিন পণ্য।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর