অর্থনীতি

শুরু হয়েছে জাতীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প পণ্যমেলা

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শতভাগ দেশি পণ্যের সবচেয়ে বড়ো আয়োজন ১১তম জাতীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প পণ্য মেলা শুরু হয়েছে। অংশ নিয়েছে সাড়ে তিনশরও বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান। সম্মেলন কেন্দ্রের সামনের প্রাঙ্গনে সাতদিনব্যাপী চলবে এ মেলা। আজ দ্বিতীয় দিনের মত চলছে এ আয়োজন।

সূচিশিল্পী ইলোরা পারভীন ৩০ বছর সুই সুতোয় একেছেন নানা শিল্প কর্ম। নিপুণ হাতে ফুটিয়ে তুলেছেন মাওলানা হামিদ খান ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কে।

বাদ যায়নি মাশরাফি বিন মুর্তজা থেকে গ্রাম বাংলার আবহমান চিত্র। জাতীয় জাদুঘরে সদ্য বিক্রি করেছেন ১১ লাখ টাকার ছবি। আরও ৭ থেকে ৮ লাখ টাকার ছবি বিক্রি করেছেন মালয়েশিয়া, তুরস্ক, ফ্রান্স দূতাবাসে। বললেন নানা ঘাত প্রতিঘাত আর চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ এই অবস্থানে তিনি।

তিনি বলেন, '২০ বছর ধরে শুধু সাধনা করেছি। ব্যবসা করবো এই চিন্তা ছিল না। আমি শুরু করেছিলাম একটা ভিন্নধর্মী শিল্প  আবিষ্কারের জন্য।'

এমন নানা সাফল্যের গল্প নিয়ে এক ছাদের নিচে জড়ো হয়েছেন পোশাক, প্লাস্টিক, পাটপণ্য, কারুশিল্প, চামড়া, কৃষি, ইন্জিনিয়ারিং থেকে জুয়েলারি সব পণ্যের উদ্যোক্তারা।

ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোগ আর নানামুখী প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সামনে রেখে 'স্মার্ট বাংলাদেশ স্মার্ট অর্থায়ন' প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের মূল প্রবাহের জন্য সম্ভাব্য সমাধান শ্লোগানে শুরু হয়েছে ১১তম জাতীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প পণ্য মেলা বা এসএমই মেলা।

ক্ষুদ্র বা মাঝারি আকারের উদ্যোগকে প্রায়ই বাংলাদেশের অর্থনীতির ইঞ্জিন রুম হিসেবে বর্ণনা করা হয়। লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং টেকসই চালায়ও এ খাত।

উদ্যোক্তারা বলছেন, অর্থনীতির শক্তি সঞ্চার করতে এ আয়োজন বেশ ভালো। দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য। সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে।

এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে সাড়ে তিনশ'র বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান, ৬০ শতাংশ নারী-উদ্যোক্তা, ৩০টি ব্যাংক, পোশাক খাতের সবচেয়ে বেশি ৭৫টি প্রতিষ্ঠান,এছাড়া পাটজাত পণ্যের ৪২টি, হস্ত ও কারু শিল্পের ৩৮টি, চামড়াজাত পণ্য খাতের ৩২টি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের ২৭টি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের ২৩টি প্রতিষ্ঠান।

মেলায় আগত ক্রেতা দর্শনার্থীরা বলছে, এমন আয়োজন দেশীয় পণ্যের সাথে পরিচিতির মেলবন্ধন তৈরি করে। নিজস্ব সক্ষমতা জানান দেয়।

দর্শনার্থীদের একজন বলেন, 'আয়োজন সুন্দর যেহেতু দেশীয় পণ্য উপস্থাপন করার জায়গা।'

গতবছর ৪৩.৬২ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করে এবং ৭২.৮৫ কোটি টাকার অর্ডার গ্রহণ করেন স্টল মালিকরা। এবারের লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়বে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

২৫ মে পর্যন্ত শতভাগ দেশি পণ্য নিয়ে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। বিদেশি বা আমদানিকৃত কোন পণ্য মেলায় প্রদর্শন কিংবা বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গন দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর