নিউজিল্যান্ড উপকূল থেকে ৩ হাজার মাইল দূরে আর অ্যান্টার্কটিকা থেকে ২ হাজার মাইল উত্তরে প্রশান্ত মহাসাগরের দুর্গম স্থান পয়েন্ট নেমো পৃথিবীতে মানুষের জন্য সবচেয়ে দুর্গম স্থান যেখানে বেশিরভাগ সময় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনকে সবচেয়ে কাছ থেকে দেখা যায়। এই স্থানটি পৃথিবী থেকে ২শ'২৭ নটিক্যাল মাইল ওপরের কক্ষপথে।
২০৩১ সালে এই অবস্থানেই অবসর নেবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। সমুদ্রের এই স্থানটিকে বলা হয় মহাকাশের কবরস্থান। অন্য মহাকাশ স্টেশন, স্যাটেলাইট আর মহাকাশ বর্জ্য ভূপাতিত হয়েছে এখানেই।
১৯৭১ সাল থেকে এই স্থানে ফেলা হয়েছে ২শ' ৬৩ টিরও বেশি মহাকাশ বর্জ্য। এরমধ্যে আছে নাসার প্রথম মহাকাশ স্টেশন স্কাইল্যাব, রাশিয়ার মির মহাকাশ স্টেশন। এই বিশাল এলাকাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বড় এই মহাকাশ স্টেশনগুলোর টুকরো। প্রশান্ত মহাসাগরের এই এলাকাটি কোন ধরনের দ্বীপ ছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্রপৃষ্ঠ। এই অঞ্চলটিতে কোন দেশেরই প্রভাব বিস্তারের এখতিয়ার নেই।
পুরনো স্যাটেলাইটের মতো মহাকাশ বর্জ্য প্রতিদিনই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আসে। কিন্তু অনেক সময় সেটা দেখাই যায় না কারণ এগুলো বায়ুমণ্ডলেই ধ্বংস হয়ে যায়। সমুদ্রে পয়েন্ট নেমোতে যেই মহাকাশ বর্জ্য পড়ে, সেগুলো মানুষ বা কোন অবকাঠামোর জন্য হুমকি নয়। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা জানিয়েছে, ২০৩১ সালে পৃথিবীতে ভূপাতিত করানো হবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনকে।
১৯৯৮ সালে মহাকাশে পাঠানো হয় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনটিকে। এই স্টেশনটি ১৫ বছর মহাকাশে থাকার মতো করে বানানো হয়েছিলো। কিন্তু আইএসএস মহাকাশে থাকবে ২০৩১ সাল পর্যন্ত। প্রথমদিকে বাণিজ্যিক সব মডিউল আইএসএস'এর মূল অংশ থেকে আলাদা করা হবে। এরপর এটিকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের কাছে নিয়ে আসা হবে।
কয়েকটি মহাকাশযান পাঠানো হবে আইএসএস'কে পৃথিবীর দিকে ঠেলে দিতে। বায়ুমণ্ডলের প্রবেশের পর বেশিরভাগ অংশেই আগুন ধরে যাবে। যতোটুকু থাকবে তার স্থান হবে প্রশান্ত মহাসাগরের পয়েন্ট নেমোতে।