ইসরাইলকে লক্ষ্য করে গভীর রাত থেকে একের পর এক ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ইরান। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী ও ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। একযোগে তিন জায়গা থেকে হামলায় দিশেহারা হয়ে পরে ইসরাইল। রাজধানী তেল আবিবসহ জেরুজালেম, পশ্চিম তীর, বেথলেহেমের আকাশে সাইরেনের সঙ্গে প্রতিধ্বনিত হয় মানুষের কান্নার রোল ও চিৎকার।
তবে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী দাবি করছে, ইরানের ছোঁড়া তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ৯৯ শতাংশই প্রতিহত করেছে তারা। নিজেদের আকাশসীমায় প্রবেশের আগেই হিজবুল্লাহ ও হুতিদের আক্রমণও শক্ত হাতে ঠেকিয়েছে ইসরাইল। এক বিবৃতিতে ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানায়, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের একটি সেনাঘাঁটিতে কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আঘাত হেনেছে। এতে সামান্য অবকাঠামোগত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর আহত হয়েছে ৭ বছর বয়সী এক শিশু।
ইসরাইলি বাহিনীর দাবি তাদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা খুব শক্তিশালী। আয়রন ডোম, ডেভিডস স্লিংসহ অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ড্রোন, রকেট, ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ মিসাইল মোকাবিলা করতে সক্ষম।
প্রত্যক্ষদর্শীর ভিডিওতে দেখা যায়, ইরানি বেশকিছু ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র মাঝ আকাশেই বিস্ফোরিত হয়। এর মাত্র কয়েকটি ইসরাইলি মাটিতে এসে পড়ে। স্যাটেলাইট ও মেটা ডেটার সাহায্যে হামলার অবস্থান শনাক্ত করে প্রতিরোধ গড়ে তোলে ইসরাইলিরা।
এদিকে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড দাবি করছে, তারা সফলভাবে ইসরাইলি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পেরেছে। ইসরাইলের অভ্যন্তরে নির্দিষ্ট কিছু সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়। ইরান বলছে, নিজেদের আত্মরক্ষায় তারা ইসরাইলে হামলা চালিয়েছে। যা করা হয়েছে জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে।
হামলার কড়া নিন্দা জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ইসরাইলকে সহায়তা করার জন্য মার্কিন বাহিনী প্রস্তুত আছে। এ সময় নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তিনি। নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘসহ পশ্চিমা নেতারা। নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের দাবি জানিয়েছে ইসরাইল।
ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের আক্রমণ শুরুর পর আনন্দে মেতে উঠে ইরানিরা। তেহরানের রাস্তায় আনন্দ মিছিল বের করে। ইসরাইল নিপাত যাক বলে এ সময় স্লোগান দিতে থাকে তারা।