কৃষি , মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ
দেশে এখন
0

নড়াইলে বছরে অন্তত ৭শ' কোটি টাকার চিংড়ি বিক্রি

চিংড়ি চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন নড়াইলের প্রান্তিক চাষিরা। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখানকার চিংড়ি বর্তমানে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীরা। ফলে প্রতিবছরই এ জনপদে বাড়ছে চিংড়ি চাষ। বছরে অন্তত ৭শ' কোটি টাকার চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে এ জেলা থেকে।

চিংড়ি চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের জেলা নড়াইলে। নব্বই দশকের শুরুর দিকে জেলার হাতে গোনা কয়েকজন মৎস্য চাষি স্বল্প পরিসরে মিঠা পানিতে গলদা চিংড়ির চাষ শুরু করেন। তাদের সাফল্য দেখে আশপাশের কৃষকরাও চিংড়ি চাষে আগ্রহী হন।

মিঠাপানির গলদা চিংড়ি খেতে সুস্বাদু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলসহ বিদেশেও এর চাহিদা বাড়তে থাকে। চাহিদার সাথে এ অঞ্চলে বাড়ে ঘেরের সংখ্যাও। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার সুস্বাদু চিংড়ি যাচ্ছে জাপান, ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদিআরব, ভিয়েতনামসহ বেশ কয়েকটি দেশে।

চিংড়ি চাষিরা বলেন, 'চিংড়ির ব্যবসায় ভালো লাভ হচ্ছে। চার থেকে পাঁচটা আড়তে মাছ বিক্রি করে থাকি। সব মাছ সেখানেই যায়।'

আরেকজন বলেন, 'চিংড়ি চাষ করে আমরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছি।'

জেলার মৎস্য চাষিদের জন্য নড়াইলে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি চিংড়ি বিক্রয় কেন্দ্র। বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা এসকল বিক্রয় কেন্দ্র থেকে মিঠাপানির গলদা চিংড়ি কিনে নিয়ে যান। তবে নড়াইলে ব্যাপকভাবে চিংড়ি উৎপাদন হলেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য নষ্ট হচ্ছে সুনাম।

ব্যবসায়ীরা বলেন, 'এই মিঠা পানির গলদা চিংড়ির চাহিদা অনেক বেশি। মিডিয়াম চিংড়ি ১২শ' থেকে ১৩৫০ টাকা কেজি করে মাছ কিনছি। এখান থেকে আমরা মাছ ঢাকা, খুলনাসহ সারাদেশে দিয়ে থাকি।'

নড়াইলের ঘের মালিক সমিতির সভাপতি আকরাম শহিদ চুন্নু বলেন, 'কোটি কোটি ডলার চিংড়ি রপ্তানি করে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছিল। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীদের যদি নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তাহলে অচিরেই চিংড়ি শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে।'

দশ বছর পূর্বে জেলায় ঘেরের সংখ্যা ছিল তিন হাজার ৮শ'। বর্তমানে জেলায় ৫ হাজার ৩শ' ৯১টি ঘের রয়েছে। চাষ বাড়ানোর লক্ষ্যে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ চাষিদের পাশেই আছেন বলে জানালেন মৎস্য বিভাগ কর্মকর্তা।

নড়াইল জেলা মৎস্য অফিসার এইচ এম বদরুজ্জামান বলেন, 'গুণগত মানসম্পন্ন চিংড়ি উৎপাদনের জন্য আমরা কাজ করছি। চাষি অবস্থায় এই চিংড়ি কোনোভাবেই অনিরাপদ না হয় তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। চাষিদের বিভিন্ন রকমের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।'

এ পেশার সাথে জড়িত রয়েছে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।

ইএ