দেশে এখন
0

এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের পথপ্রদর্শক বঙ্গবন্ধু

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের আজকের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি পরিবার থেকে রাজনীতি সংগঠন কিংবা রাষ্ট্র, সবদিক থেকে অনবদ্য ছিলেন।

শত বছর আগে, যখন মুজিবের জন্ম হয়, তখন সুসময় ছিলো না। পরাধীন ভারতীয় উপমহাদেশে লাগামহীন রাজত্ব করছিলো, হাজার মাইল দূর থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসা ব্রিটিশ বেনিয়ারা।

উত্তরে বাঘিয়ার আর দক্ষিণে কালিগঙ্গা নামে বয়ে যাওয়া মধুমতি তীরের এক গ্রাম টুঙ্গিপাড়া। যেখানে পাচুরিয়া খাল, তার পাড়ের হিজল গাছটির সঙ্গে খোকা থেকে ইতিহাসের বঙ্গবন্ধু হওয়ার অভিযাত্রা শুরু হয় বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তানের।

ডানপিঠে শৈশব, গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে শেরে বাংলার সঙ্গে পরিচয়, সবই মহিরুহ মুজিবের কৈশোর স্মৃতি। ১৯৩২ সালে পিতাহারা রেণুর সঙ্গে মুজিবের বিয়ে হয়।

নিভৃত গ্রাম, প্রান্তের মানুষ, তাদের শ্রম ও ঘাম সংস্কৃতি ভিত গড়ে দিয়েছিলো বিশাল হৃদয় মুজিবের।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, বঙ্গবন্ধুর পরিবার বেশ অভিজাত ছিল। কারো গায়ে কাপড় না থাকলে তিনি নিজের জামা দিয়ে চলে এসেছেন। খালি গাড়ে ফিরে আসলেও তার বাবা-মা তাকে কিন্তু বকতেন না।

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, ‘গ্রামে জন্মগ্রহণ করার ফলে গ্রামীণ যে বৈশিষ্ট্য আছে, জীবনযাপনের যে ধরণ আছে সবকিছু নিয়ে তিনি অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ধারণ করতে পেরেছিলেন।

ভারতে শিক্ষাজীবনে ইসলামিয়া কলেজে ছাত্রনেতা কিংবা বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়াকে মুজিবের আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক জীবনের সূচনা বলা যায়। এরপর একজন মুজিব দেখেছেন, ভয়ংকর ও নৃশংস ১৯৪৬ এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। ১৯৪৭ এর ভারত ভাগের আন্দোলনেও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে শেখ মুজিব স্বাধীন বাংলা গড়ার পক্ষে ছিলেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন, ভাষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে নির্বাচন একজন মুজিবকে বাঙালির নেতা হিসেবে আবির্ভূত করে। রাজনীতির যে অভিযাত্রায় স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম।

নুরুল হুদা আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুই ৭ মার্চের ভাষণে বাঙালির সব ধরনের মুক্তির কথা বলেছিলেন।’

সেলিনা হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতির স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে আমরা বিশ্ব দরবারে একটি বড় জায়গা গ্রহণ করতে পেরেছি।’

বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাঙালি জাতির পিতা যে অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন তা আজও প্রাসঙ্গিক।

মাত্র ৫৫ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনে একজন মুজিব পরিবার থেকে সমাজ, রাজনীতি, সংগঠন থেকে রাষ্ট্র সবখানে একজন অনুকরণীয় আদর্শ। যার পথ অনুসরণ করেই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় লাল সবুজের বাংলাদেশ।