২০২৩ সালের মাঝামাঝি থেকে অস্থিতিশীল পেঁয়াজের বাজার। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। যা গেল বছরের তুলনায় অন্তত তিনগুণ বেশি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও আশানুরূপ ফল মেলেনি। এমন অবস্থায় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে হাটে মাঠে যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
বগুড়ার রাজাবাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। গেল সপ্তাহে ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ বুধবার বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। ব্যবসায়ীদের দাবি সরবরাহ বাড়ায় কমছে দাম।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ আসার খবরে ক্রেতারা কম পেঁয়াজ নিচ্ছে। এজন্য দাম একটু কম। একসপ্তাহ আগে বাজার ছিলো ১১০-১২০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা।
দাম কমেছে ভোগ্যপণ্যের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জেও। ১৫ থেকে ২০ টাকা কমে পাইকারিতে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়।
তবে নরসিংদীর বাজারগুলোতে এখনো কমেনি পেঁয়াজের দাম। উল্টো বুধবার প্রতিমণ পেঁয়াজে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। বর্তমানে শহরের বড় বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০টাকায়।
এদিকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে পাবনার কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাজ। দাম কমার আশঙ্কায় জমি থেকে অপরিপক্ক পেঁয়াজ তুলছেন তারা। চাষিরা বলেন, 'শুনলাম যে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসবে। তাই আমরা আগেই পেঁয়াজ তুলে ফেলতেছি। কারণ দাম পরে নাও পাইতে পারি। বাজার আগে ভালো ছিলো, এখন কৃষক ক্ষতির মুখে।'
অপরিপক্ক পেঁয়াজ তোলা অব্যাহত থাকলে পূরণ হবে না উৎপাদনের লক্ষমাত্রা। এমন অবস্থায় কৃষকদের নানা পরামর্শ দিচ্ছে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন। বলেন, 'উঠান বৈঠকের মাধ্যমে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি যে এই পেঁয়াজ ৮ থেকে ১০ দিন পর উঠালে অনেকদিন সংরক্ষণ করে রাখা যাবে। ৬ মাস পরে ভালো দাম পেতে পারে। যা গতবছর পেয়েছিলো।'
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এবার দেশের ২ লাখ ৫৬ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে চারা বা হালি পেঁয়াজ ১ লাখ ৭৯ হাজার হেক্টর, মুড়িকাটা বা কন্দ পেঁয়াজ ৬৬ হাজার ৬৬১ হেক্টর ও বীজ পেঁয়াজ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে।