ভারতীয় মহাদেশে শক্তির লড়াই কিংবা কুস্তি বেশ পরিচিত। তবে সেখানে স্বাভাবিকভাবে নারীদের চেয়ে পুরুষদের বিচরণ বেশি। বাঙ্গালি নারীদের প্রথম কুস্তিগীরের নাম জানতে যেতে হবে ৬০ থেকে ৭০ বছর পেছনে। সেই ১৯৪০-৫০ এর দশকের ঘটনা। পুরুষদের মাঝে নিজের শক্তিমত্তায় আলাদাভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে নিজেকে চিনিয়েছেন হামিদা বানু। এরপর থেকে মূলত ভারতে কুস্তিতে নারীদের যাত্রা শুরু।
এরপর একে একে গীতা ফোগাট, শাকশি মালিকদের মতা আরও বেশ কয়েকজন সাধারণ নারী থেকে হয়েছেন তারকা কুস্তিগীর। জিতেছেন ব্রোঞ্জ থেকে স্বর্ণ পদক । হয়েছেন বাকি নারীদের কুস্তি শেখার অনুপ্রেরণা।
প্রতিবেশী দেশ ভারতে নারীদের কুস্তি শেখানোর জন্য আছে হাতেগোনা কয়েকটি স্কুল। সেসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোর বেশিরভাগ কার্যক্রমই চলে বিভিন্ন মাধ্যমের অর্থায়নে। এই যেমন ভারতের হারিয়ানা রাজ্যের সিসাইয়ে আলটিয়াস রেসলিং স্কুল। এখানে উচ্চ মানের কুস্তিগীর তৈরিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন ২৪ জন নারী।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘প্রথমদিকে দেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখতাম। যখন সে ইচ্ছা পূরণ হয়েছে পরবর্তীতে আন্তজার্তিক পর্যায়ে খেলার স্বপ্ন দেখা শুরু করি আশা করি সে ইচ্ছাও পূরণ হবে।’
আরেকজন বলেন, ‘এই স্কুল না থাকলে আমরা একা একা হয়তো কিছুই করতে পারতাম না। এতদিনে হয়তো বিয়ে বাচ্চাও হয়ে যেত। তবে, বর্তমানে নিজের এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গে নিজের পরিবারের জন্য সুনাম অর্জন করতে পেরেছি । অর্থ উপার্জন করার সক্ষমতা হয়েছে।’
রক্ষণশীল মানসিকতার শিকলে আটকে পড়া নারীদের এগিয়ে নিতে শুধু কুস্তি প্রশিক্ষণই নয়। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতেও লেখাপড়ার ব্যবস্থা আছে সেখানে।
প্রশিক্ষক বলেন, ‘যে নারীরা একসময় গরু লালন করতেন পরিবার ও সমাজে কোনো দাম ছিলো না, তাদের পেছনে এখন দাদা, চাচাদের সমর্থন করতে দেখে ভালো লাগে। মেয়েদের নিজেদের বাড়ি ,গাড়ি আছে এখানেই সন্তুষ্টি কাজ করে।’
রাজ্য সরকারের তহবিল নারীদের কুস্তি প্রশিক্ষণে ব্যবহার হয়ে থাকে। আর শিক্ষার্থীদের পরিবারকে মাসিক প্রায় নয় হাজারের বেশি টাকা খরচ করতে হয়ে একাডেমির শিক্ষার জন্য।