চট্টগ্রামে ৭ হাজার একরের মহুরি মৎস্য প্রকল্প

কৃষি , মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ
অর্থনীতি
0

প্রায় ৭ হাজার একরজুড়ে দেশের বড় মৎস্য প্রকল্প চট্টগ্রামের মহুরি প্রজেক্ট। বিশাল জলাভূমিতে বছরে উৎপাদন হয় প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টন মাছ, যার বাজারদর এক থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা। চট্টগ্রামে মিঠা পানির মাছের প্রায় ৭০ ভাগ যোগান আসে এখান থেকেই।

শত শত জলাশয়ের এই প্রকল্পে দুই একর থেকে শুরু করে ৩০ একরের পর্যন্ত জলাশয় আছে। প্রায় ৭ হাজার একরের এ মৎস্য ভান্ডার দেশে মিঠা পানির মাছের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। ফেনীর সোনাগাজী আর মীরসরাইয়ের তিনটি ইউনিয়নজুড়ে যার অবস্থান।

প্রতিনিয়তই এখানকার জেলেদের জালে ধরা পড়ে বড় বড় রুই, কাতলা। প্রতিদিন আহরণ হয় ৮০-১০০ টন মাছ। বড় চাষের মাছের পাশাপাশি কই, টেংরা, মলা, পাবদা, শিংসহ ছোট আকৃতির নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যায় এখানে। মৎস্য বিভাগের হিসাবে, ২০২২ সালে ৭ হাজার একর জলাশয়ে ধরা পড়ে ৪৮ হাজার টন মাছ, যার বাজার মূল্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। চট্টগ্রামের মোট মৎস্য চাহিদার ৭০ ভাগ জোগান দেয় বিশাল এ প্রকল্প ।

১৯৮৪ সালে এখানে ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধ দেয়া হয়, গড়ে তোলা হয় দেশের প্রথম বায়ু বিদুৎ প্রকল্প। গত ৪০ বছরে এখানে বিনিয়োগ করেছেন ছোট-বড় ১০ হাজার চাষী। অসংখ্য বড় বড় শিল্পগোষ্ঠীও বিনিয়োগ করেছে এখানে।

তবে দিনের চাইতেও রাতের বেলা বেশি কর্মমুখর থাকে এই উপকূল। মাছ ধরা শুরু হয় মধ্যরাত থেকে। শত শত চাষি, জেলে, ব্যবসায়ী ও পরিবহন শ্রমিকদের হাঁকডাকে মুখর চারপাশ।

অন্যদিকে এখান থেকে আহরণ করা মাছ নিতে অপেক্ষায় থাকে শত শত গাড়ি। মাছ এনে গাড়িতে ড্রাম ভর্তি পানিতে রাখা হয়। শ্রমিকরা পরিমাণমত স্যালাইন ও অক্সিজেন মেশান মাছ জীবিত রাখতে। একরাতে ৩শ' থেকে ৪শ' গাড়ি মাছ নিয়ে চলে যায় চট্টগ্রাম, ফেনী ও কুমিল্লার  আড়তে।

মাছ পরিবহনের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা জানান, '১১ টা  বা ১২ টা থেকে মাছ ধরা শুরু করি, রাত ২-৩টার দিকে মাছ ধরা শেষ হয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে গাড়ি আসে মাছ নিয়ে যায়।' আরেকজন বলেন, 'ড্রামের মধ্যে আমরা পানি নেই। পানি নেওয়ার পরে মাছ ঢেলে স্যালাইন ও অক্সিজেন পাউডার মেশানো হয়।' 

মাছ চাষের সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার শ্রমিকের জীবন আর কর্মসংস্থান। আশেপাশে গড়ে উঠেছে ১০টিরও বেশি জেলে পাড়া। প্রায় ৭ হাজার একরের মিঠা পানির মাছের সবচেয়ে বড় প্রকল্পটিতে প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষের। এর বাইরে নানাভাবে জড়িত এক লাখেরও বেশি মানুষ।

স্থানীয় এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, 'আমি প্রায় ১০ বছর হয়েছে এই সেক্টরে। আমার বাবার হাত ধরে এসেছি। আমি মনে করি এখানে আসলে অনেক গ্যাপ আছে। অনেক সুযোগ এখনো আছে। আমরা চাইলে অনেক এক্সপোর্ট রেভিনিউ করতে পারি এই সেক্টর থেকে।'

পরিবারের হাত ধরে এখানে মাছ চাষ আর নানা রকম ব্যবসায় ঝুঁকছেন উচ্চশিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম। যোগ হচ্ছে আধুনিক চাষ পদ্ধতি। বাড়ছে প্রযুক্তির ব্যবহারও। এতে প্রতি একরে মাছ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ছে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ। আছে মাছের খাদ্য, রাসায়নিক, পরিবহন, ড্রাম, যন্ত্রপাতির ব্যবসাও। বিশাল এ অঞ্চলে প্রতিবছর মাছের খাদ্য লাগছে ৬৩ লাখ টনের বেশি। যার বাজারমূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।

১০ থেকে ২০ একর জমি দিঘি চাষ করে অনেক তরুণ স্বাবলম্বী হয়েছে। তবে আছে চ্যালেঞ্জও। উদ্যোক্তারা বলছেন, এখানকার মৎস্য প্রকল্পে বছরে পোনা লাগে প্রায় ৬০ লাখ। অথচ এ প্রকল্প এলাকায় মাছের রোগ শনাক্ত, পরীক্ষা বা পোনার জন্য সরকারি হ্যাচারি বা ল্যাব নেই। নেই কোন বরফকলও।

সোয়াস অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মেজর ( অব.) সোলায়মান বলেন, 'আমাদের এখানে সেমি ইন্টেসিভ কালচার চলছে।  ইন্টেসিভে এখনো আমরা যাইনি।  আমরা প্লান করতেছি দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ ইন্টেসিভ কালচারে চলে যাবো।'

জলাশয়পাড়ে আম, নারিকেলসহ নানা ফলমূলের আবাদ করছেন অনেকে। কেউ আবার ঝুঁকছেন মধু চাষে। সরিষাসহ নানা প্রকার শস্য, ফসলের মাঠে উড়ে বেড়ায় মৌমছির দল। সারি সারি বসানো বক্সে মধু নিয়ে ফিরছে মৌমাছির ঝাঁক।

চরাঞ্চলের জমিতে সরিষাসহ নানা খাদ্যশস্যের মধু সংগ্রহ হয়। উপকূলীয় অঞ্চল শুধু মৎস্য চাষ নয় এর পাশাপাশি বিশাল চারণ ভূমি হয়ে উঠেছে পশু পালনের উর্বরক্ষেত্র। এখানে নানা জাতের পশুপালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেক পরিবার। যোগান হচ্ছে দুগ্ধজাত পণ্য আর পূরণ হচ্ছে আমিষের চাহিদা।

বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠে চড়ে বেড়ায় গরু, ভেড়া, ছাগল। এ অঞ্চলে প্রাণিজ আমিষ ও দুধের বড় জোগান হয় এ প্রকল্প এলাকা থেকে। চরের পানিতে চোখে পড়ে মহিষের পাল।

মৎস্য বিভাগ বলছে, মাছের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি এখানে বিলুপ্তপ্রায় মাছ যেমন শিং, পাবদা, মাগুর, টেংরাসহ নানারকম মাছ চাষে চাষীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তারা।

দিনশেষে অপরুপ সৌন্দর্যের এ প্রকৃতি মুগ্ধ করে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদেরও। সেই সুবাদে গড়ে উঠেছে বিনোদন কেন্দ্র। স্থানীয়রা বিকালের সূর্য ডোবার দৃশ্য দেখতে ছুটে আসেন এখানে।

বছরে হাজার কোটি টাকার মাছ। শত শত কোটি টাকার খাদ্য আর রাসায়নিক। আর প্রায় ১০ হাজার মানুষের জীবন জীবিকা মিলে কয়েক হাজার কোটি টাকার অর্থনীতি ঘুরে দেশের এই বৃহত্তম মৎস্য প্রকল্প ঘিরে। কিন্তু এখানকার উদ্যোক্তাদের মধ্যে আশংকার কালো ছায়া এই মৎস্য প্রকল্পের পাশেই হচ্ছে দেশের বৃহত্তম মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর। এ শিল্প নগরের বিস্তার ঘটলে এই বিশাল মৎস্য ভান্ডার হুমকির মধ্যে পরতে পারে বলছেন উদ্যোক্তারা।

ইএ

শিরোনাম
দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের; বৈষম্যহীন, সুখী-সমৃদ্ধ, শান্তিময় ও আনন্দপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তোলাই এবার বাংলা নববর্ষের অঙ্গীকার: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস; বিগত বছরের গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে নতুন প্রত্যয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে
'নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান' প্রতিপাদ্যে আনন্দ শোভাযাত্রা, চারুকলা থেকে বের হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ, ২৮টি জাতিগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ, নতুন সময়ে অনন্য আয়োজনে উচ্ছ্বসিত অংশগ্রহণকারীরা
আজকের নববর্ষ পালনের মাধ্যমে শুধু দেশ নয় বিশ্বব্যাপী ঐক্য ও সম্প্রীতির ডাক দেয়া হয়েছে: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য
বাংলাদেশ একটি নির্দিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর না, বাংলাদেশ সবার, এমনটা চিন্তা করলে ঐক্যে ফাটল ধরবে না: মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
বর্তমানে চলতে হবে শান্তিপূর্ণ নীতি নিয়ে: বাংলা একাডেমির সভাপতি
অন্তর্বর্তী সরকার অবশ্যই রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে, যেন পরে যারা ক্ষমতায় আসবে তারা চালিয়ে নিতে পারে: আখতার হোসেন; দীর্ঘদিন ধরে সংস্কৃতি নষ্টের পাঁয়তারা করা হয়েছিল
পহেলা বৈশাখকে দলের সাংস্কৃতিক হাতিয়ারে পরিণত করেছিল পতিত আওয়ামী লীগ: নাহিদ ইসলাম; গণপরিষদ নির্বাচনের এজেন্ডা সামনে নিয়ে এগোচ্ছে এনসিপি
বিশ্বজুড়ে মানুষের মধ্যে বৈষম্য নয়, বৈচিত্র্য আসুক: আনু মুহাম্মদ ঘরে ঘরে বাংলা চর্চা বাড়াতে হবে: মাহফুজ আনাম
সংস্কৃতির মাধ্যমে জাতিগত পার্থক্য বুঝা যায়, তাই বাঙালি সংস্কৃতি ধরে রাখার আহ্বান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের
অন্যায় অবিচারের অবসানের বার্তা হিসেবে এই উৎসব প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দেয়ার আহ্বান শিল্প উপদেষ্টার
বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষে গান-আনন্দ শোভাযাত্রাসহ দেশজুড়ে নানা আয়োজন
রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে গাজায় শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন
পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী উদ্দোক্তাদের ঋণ সহায়তা দিতে উদ্যোগ নেবে সরকার
দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের; বৈষম্যহীন, সুখী-সমৃদ্ধ, শান্তিময় ও আনন্দপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তোলাই এবার বাংলা নববর্ষের অঙ্গীকার: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস; বিগত বছরের গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে নতুন প্রত্যয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে
'নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান' প্রতিপাদ্যে আনন্দ শোভাযাত্রা, চারুকলা থেকে বের হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ, ২৮টি জাতিগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ, নতুন সময়ে অনন্য আয়োজনে উচ্ছ্বসিত অংশগ্রহণকারীরা
আজকের নববর্ষ পালনের মাধ্যমে শুধু দেশ নয় বিশ্বব্যাপী ঐক্য ও সম্প্রীতির ডাক দেয়া হয়েছে: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য
বাংলাদেশ একটি নির্দিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর না, বাংলাদেশ সবার, এমনটা চিন্তা করলে ঐক্যে ফাটল ধরবে না: মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
বর্তমানে চলতে হবে শান্তিপূর্ণ নীতি নিয়ে: বাংলা একাডেমির সভাপতি
অন্তর্বর্তী সরকার অবশ্যই রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে, যেন পরে যারা ক্ষমতায় আসবে তারা চালিয়ে নিতে পারে: আখতার হোসেন; দীর্ঘদিন ধরে সংস্কৃতি নষ্টের পাঁয়তারা করা হয়েছিল
পহেলা বৈশাখকে দলের সাংস্কৃতিক হাতিয়ারে পরিণত করেছিল পতিত আওয়ামী লীগ: নাহিদ ইসলাম; গণপরিষদ নির্বাচনের এজেন্ডা সামনে নিয়ে এগোচ্ছে এনসিপি
বিশ্বজুড়ে মানুষের মধ্যে বৈষম্য নয়, বৈচিত্র্য আসুক: আনু মুহাম্মদ ঘরে ঘরে বাংলা চর্চা বাড়াতে হবে: মাহফুজ আনাম
সংস্কৃতির মাধ্যমে জাতিগত পার্থক্য বুঝা যায়, তাই বাঙালি সংস্কৃতি ধরে রাখার আহ্বান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের
অন্যায় অবিচারের অবসানের বার্তা হিসেবে এই উৎসব প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দেয়ার আহ্বান শিল্প উপদেষ্টার
বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষে গান-আনন্দ শোভাযাত্রাসহ দেশজুড়ে নানা আয়োজন
রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে গাজায় শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন
পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী উদ্দোক্তাদের ঋণ সহায়তা দিতে উদ্যোগ নেবে সরকার