পুরান ঢাকার মুসল্লিদের কাছে ঈদের পর শবে বরাতের রাত অন্যতম। তাদের কাছে এই রাত উদযাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে হালুয়া-রুটি। এ রাতের খাবার হিসেবে থাকে ঐতিহ্যবাহী নকশী রুটি। নগর জীবনের যা এখন আর বাড়িতে বাড়িতে তৈরি হয় না। সেক্ষেত্রে এই চাহিদা পূরণ করে থাকে বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ।
প্রতিবছরের মতো এবারও বিভিন্ন ধরনের রুটি তৈরি করছেন পুরান ঢাকার দোকানিরা । গোলাকার, নকশা করা মাছের ও ফুলের আকৃতিতে বানানো অসংখ্য নকশার রুটি পাওয়া যাচ্ছে।
শবে বরাতে হালুয়া-রুটি বিতরণের ধর্মীয় কোন তাৎপর্য না থাকলেও এটি শত বছর ধরে সামাজিক রেওয়াজে পরিনত হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিবেশির সঙ্গে গড়ে ওঠে সামাজিক সম্পর্ক ও নিবিড় যোগাযোগ ব্যবস্থা।
পুরান ঢাকার বাসিন্দারা বলেন, 'একমাস আগে থেকেই এই হালুয়া-রুটি নিয়ে হইচই পড়ে যায়। এটা অনেক আগের সংস্কৃতি। এর মাধ্যমে আমাদের একে অপরের সাথে সম্পর্ক আরও মজবুত হয়।'
প্রতিবছর পুরান ঢাকা জুড়েই এমন আয়োজন হয় বলে জানান ক্রেতা-বিক্রেতারা। বাহারি নকশার পাউরুটির সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের হালুয়া। কোনোটি পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া ও ডাল দিয়ে তৈরি। কোনোটি আবার বুট, সুজি, গাজর দিয়ে বানানো। কয়েকদিন আগে থেকেই এসব সুস্বাদু খাবারের অর্ডার পাচ্ছেন বিক্রেতারা।
বিক্রেতারা বলেন, '৪০ মণের মতো আমরা অর্ডার পেয়েছি। শবে বরাত উপলক্ষে আমাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় এবং ভালো বিক্রি হয়।'
মানভেদে একেক হালুয়ার দাম একেক রকম। বুটের হালুয়া বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজি। গাজরের হালুয়া ৬০০ টাকা ও আর অন্যান্য হালুয়ার কেজি ৮০০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পুরান ঢাকার বাসিন্দারা আরও বলেন, 'এখন আর বাসায় তৈরি না হলেও ঐতিহ্য ধরে রাখতে দোকান থেকে কিনে নেন রুটি হালুয়া কিনেন তারা।'
অনলাইনে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এখন এই সুবিধা দিচ্ছে। শবে বরাতের রাতে খাবার পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে দুই-তিন দিন আগে থেকে শুরু হয় অর্ডার। ফেসবুকসহ বিভিন্ন গ্রুপেও অর্ডার নেয়া হচ্ছে চালের রুটি, হালুয়া, গরু ও হাঁসের মাংস।