দেশে এখন
0

বাণিজ্যিকভাবে কেন সফল নয় ক্রীড়াঙ্গনের বই?

প্রাণের মেলা বইমেলা। যেখানে সাহিত্য, কবিতা, ছোটগল্প উপন্যাস বইয়ের ঠাঁই হয়েছে এক জায়গায়। অথচ ক্রীড়াবিষয়ক বইয়ের দেখা নেই একেবারেই। প্রকাশকদের দাবি বাণিজ্যিকভাবে ক্রীড়াঙ্গনের বই খুব একটা সফল নয়। তাই ক্রীড়া বিষয়ক পাণ্ডুলিপিতে লগ্নি থেকে বিরত থাকেন তারা।

নতুন কিছু অন্বেষণে বইয়ের পাতায় পাতায় পাঠকের উঁকি। হাজারো বইয়ের মধ্যে পছন্দের লেখার বই খুঁজে বের করার চেষ্টা। এক স্টল থেকে অন্য স্টলে ছুটে যাওয়া। ছড়া, কাব্য, ছোট গল্প থেকে উপন্যাস সবকিছুতেই নিজেদের কল্পনার জগতের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলা। মেলা বইয়ের রাজ্য বলে তাইতো এর নাম বইমেলা।

দেশের মানুষের অতি আগ্রহে বিশ্ববাসীর চোখে ক্রীড়াপাগল দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ। সাময়িকী বা বইয়ের রাজ্যেও তো তাহলে খেলার জগতের একটা বিশেষ অবস্থান থাকার কথা।

কিন্তু বইয়ের বিশাল এই সমাহারে ক্রীড়াপ্রেমী পাঠকদের দৃষ্টি প্রচ্ছদে আটকে যাওয়ার ঘটনা খুব কম চোখে পড়ে। সাহিত্যের মিলনমেলায় ক্রীড়াঙ্গনের বইয়ের সেভাবে বিকশিত হওয়ার সুযোগ হয়েছে কোথায়?

লেখক মোস্তফা মামুন বলেন, 'স্পোর্টস একটা ছোট খাটো জিনিস বাচ্চাদের জিনিস, সাহিত্যের মতো গুরুতর জিনিসে স্পোর্টস কেন ঢুকবে এইরকম ভাবে দেখা হয়।'

লেখক তায়িব অনন্ত বলেন, 'প্রকাশক চিন্তা করবে এমন একজন লেখকের ওপর লগ্নি করবো যিনি আমাকে আমার অন্তত টাকা তুলে দিতে পারবেন যেকয়টা বই ছাপিয়েছি। খেলাধুলার বইয়ের আগ্রহ জায়গাটা পাঠকের অনেক কম রয়েছে। যতই আমরা তত্ত্ব কথা বলি না কেন যে আমাকে একটা ভালো বই লিখতে হবে, যে বই থেকে মানুষ জানবে লিখবে। যেই বইটা থেকে লেখক পরিচিতি পাবে। দিনশেষে আসলে বাণিজ্যিক জায়গা রয়েই যায়। বাণিজ্যিকভাবে খেলাধুলার বই সফল না।

আগে মেলায় ক্রীড়াঙ্গনের বই পাওয়া গেলেও এখন বইশূন্য ক্ষেত্রটি। নতুন প্রকাশতো দূরে থাক ঢুঁ মেরেও হাজারো বইয়ের চাপায় নিখোঁজ পুরোনো প্রকাশনা। পরিসংখ্যানভিত্তিক বইয়ের থেকে গল্পের আকারে বই বেশি থাকায় কিনতে চান না পাঠকরা। তাছাড়া অনলাইন মাধ্যমে হাতের মুঠোয় বিশ্ব পেয়ে ছাপানো বইয়ের দিকে ঝোঁক কম।

মেলায় আশা পাঠকেরা বলেন, 'যা যা জানার, মূলত আমরা অনলাইনে পত্রিকার মাধ্যমে জানি। এইকারণে খুব সম্ভবত আগ্রহ কম। তখন মানুষ বই মেলাতে এসে উপন্যাস বা অন্যকিছুর দিকে ঝুঁকে।

আর্থিকভাবে লোকসানের শঙ্কায় অনেকটাই বিলুপ্তের পথে ক্রীড়াকেন্দ্রিক বই। বিক্রিতে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় ক্রীড়াঙ্গনের বই প্রকাশনায় আগ্রহের জায়গায় পিছিয়ে পড়েন প্রকাশকরা।

শোভা প্রকাশের প্রকাশক মিজানুর রহমান বলেন, 'চারটা বই প্রকাশ করেছিলাম। পাঁচ বছর আমরা গোডাউন জাত করে রেখেছিলাম বইগুলো। ৩০০ কপির মধ্যে ১০০ বা ১৫০ কপি বিক্রি হয়েছিল। বাকি বইগুলো আমরা সোল্ড আউট করেছি কেজি দরে বিক্রি করে। স্পোর্টসের বই একেবারে বাজার শূন্য। এর পাঠক আমরা পাইনি।

অনন্যা প্রকাশনীর প্রকাশক মনিরুল হক বলেন, 'বই লিখে হয়তো কোটি কোটি টাকা ইনকাম হবে না কিন্তু একটা আত্মতৃপ্তি থাকে।'

আগে বিভিন্ন সাময়িকীর সংকলন বের হতো ছাপার হরফে। পাঠকের আগ্রহ থাকতো, ঈদ বা অন্য কোন বিশেষ আয়োজনকে ঘিরে। সে সংখ্যাও কমে গেছে। যুগের চাহিদায় অনেকটাই বিবর্ণ হয়ে গেছে ঝলমলে ক্রীড়া জগতের বইয়ের ঝলক।

ইএ