গ্রামীণ কৃষি
কৃষি
0

ফসলের হাসিতেই কৃষকের বসন্ত

কত ফুল ফোটে, কত বাঁশি বাজে, কত পাখি গায়। প্রকৃতি জুড়ে বেজে ওঠে বসন্তের সুর। এই বসন্তের আনন্দ-আয়োজনের আড়ালে থাকা প্রধান কারিগর কৃষকের ঘরে কি বসন্ত আসে? তাদের বসন্তের রঙই বা কেমন?

বিদায় বেলায় শীতের কুয়াশার সঙ্গে সমস্ত পাতা ঝড়ার পর লাল টকটকে পাপড়ি মেলে পথিকের মতোই পাখিদেরও কাছে টেনে নেয় শিমুল।

এদিকে পথের ধারে যেন সদ্য বেরিয়ে আসা সবুজ পাতার আচ্ছাদনে অহঙ্কারের সুর তুলে রুপের ঈর্ষায় কাতর কৃষ্ণচুড়া। তখন আগুন রঙে ফাগুনকে রাঙিয়ে পলাশ বলে সময় এখন বসন্তের।

আর প্রকৃতির সাথে দু’হাত বাড়িয়ে বসন্ত উদযাপনের আয়োজনে যারা থাকে তাদের পরিচয় কৃষক। ঋতুরাজের সাথে চারপাশকে আনন্দ আয়োজনে মাতিয়ে তুলতে লাঙলের ফলায় শ্রম-ঘাম মিশিয়ে যারা ফুলে ফুলে ভরিয়ে তোলে মাটির বুক, বাতাসে ছড়িয়ে দেয় ফুলের ঘ্রাণ। বিনিময়ে চাওয়াটাও সামান্য আর এখানেই কৃষকের বসন্ত।

চাষিরা বলেন, 'উৎপাদন খরচ বেশি আর চাহিদা সারাবছর থাকে না। বিশেষ দিনে ফুলের দাম বেশি থাকে। তাই নার্সারি ব্যবসায়ীরা এই সময়ের অপেক্ষায় থাকেন। ফুলের দাম একটু বেশি পেলে আমরা পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবসের আনন্দ পাই।'

বসন্তের এইকালে ফসলের প্রান্তরে সাত রং না থাকলেও সবুজে সীমাবদ্ধ কৃষকের বসন্ত। সময়ের সাথে ঋতুচক্রের পালাবদলে প্রকৃতির বৈরিতা মোকাবিলা করতে গিয়ে বসন্ত খুঁজে নেয়ার ফুরসত নেই স্ট্রবেরী চাষিদের।

স্ট্রবেরী চাষিরা বলেন, 'আমরা তো বসন্ত নিয়ে চিন্তা করতে পারছি না। আমরা চাষি তাই ফসল নিয়ে ভাবছি। এসব আনন্দ করার মতো আমাদের সময় নেই। একমাত্র ফসল ভালো হলে আমরা উপভোগ করতে পারি।'

কারণ ঘরে-বাইরে মানুষের খাদ্য উৎপাদনের বড় দায়িত্বটা যে তাদের কাছে। অন্যদিকে ফল-ফসলের দাম বাড়লেও ক্রমাগত বদলে যাওয়া কৃষিতে খাপ খাইয়ে নিতে যোগ হওয়া বাড়তি খরচের জটিল অঙ্কের ফল খুঁজতেই ফ্যাকাসে রং ধরে তাদের জীবনের স্বাদ-আহ্লাদে।

এখন বসন্তে সমতলের মতো কৃষকের দখলে নদ-নদীর বুকে জেগে ওঠা চর-দ্বীপচরগুলো। বালুচরে হাড়ভাঙা খাটুনির ফসল ভুট্টা ঘরে ওঠার পর লাভের অঙ্কের উপর নির্ভর করবে এখানকার বসন্ত। কৃষকের ঘরে বারোমাস বসন্তের জন্য স্মার্ট কৃষির বাস্তবায়ন এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. মতলুবর রহমান বলেন, 'আমাদের সুন্দর একটা বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলতে হবে। যাতে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্যটা পায়। এ বিষয়কে মাথায় রেখে কৃষি বিভাগ চাষিদেরকে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে।'

বসন্তের ফুল, বাঁশি আর পাখির সুরে কান পাতার সুযোগ না হলেও পেটের ভাত জোগাতে বসন্তের সুখের আশায় কাদা-মাটি জলে বোরো চারা রোপণ করে যায় এই মাটির সন্তান-আমাদের কৃষক।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর
হেমন্ত, প্রাচীন অর্থনীতি-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক সেতুবন্ধন

হবিগঞ্জে অতিবৃষ্টিতে ব্যাহত শীতকালীন সবজি চাষ
হবিগঞ্জে অতিবৃষ্টিতে ব্যাহত শীতকালীন সবজি চাষ

ইলিশের দাম বাড়লেও ভালো নেই অধিকাংশ জেলে

শেরপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩২ হাজার হেক্টর জমির ফসল

সরকার নির্ধারিত দাম ১৪২, বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা ডজন

বাংলাদেশে বিনিয়োগের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী চীন

বগুড়ায় বছরে প্রায় ৪০ কোটি টাকার চারা বিক্রি

নেত্রকোণার মাঠে চলছে আমন চাষের ব্যস্ততা

ফুল দিয়ে তৈরি হলো সামুদ্রিক প্রাণি

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে লাগামহীন পণ্যের বাজার

এবারের বৃক্ষমেলায় ১৬ কোটি টাকার গাছ বিক্রি

গ্যাস সংকটে ব্যাহত চাঁদপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন
গ্যাস সংকটে ব্যাহত চাঁদপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন