পরিবেশ ও জলবায়ু
0

ফেনীতে দখল-দূষণে হারাচ্ছে জলাশয়

দখল-দূষণে ফেনী শহর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পুকুর আর জলাশয়। পানির প্রবাহ হারিয়ে মৃতপ্রায় প্রতিটি খাল। ফায়ার সার্ভিস বলছে, বড় ধরনের অগ্নি দুর্ঘটনা হলে তা নিয়ন্ত্রণে পানির উৎস না থাকায় চরম ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

দেড় দশক আগেও পৌর শহরে বিশাল একটি জলাশয় ছিলো। দৈনন্দিন নানা কাজের পাশাপাশি শহরের কোথাও আগুন লাগলে নেভানোর ভরসা ছিলো এটি। প্রথমে দূষণ এরপর দখল, সময়ের পরিক্রময়ায় শহরের বুক থেকে হারিয়ে গেছে জলাশয়টি। যেখানে কয়েক শতাধিক দোকান নির্মাণ হয়েছে। অপরদিকে জলাশয়টি ভরাট করায় অগ্নিঝুঁকিতে পড়েছে কয়েকশ’ কোটি টাকার সম্পদ ও অবকাঠামো।

স্থানীয়রা বলেন, ‘এই জলাশয়ের পানি আমরা দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করতাম। কিন্তু এখন জলাশয়টিই নেই। এখন কোথাও আগুন লাগলে পানির জন্য আমরা সমস্যায় পড়ি।’

আর পৌর শহরের সবজি আড়তটি একসময় খাজা আহম্মদ লেক ছিলো। কৃষির সেচ ব্যবস্থাপনায় অন্যতম ভরসা জলাশয়টি ভরাট করে ফেলা হয়েছে। এছাড়া লেকের বিপরীতের জলাধারটিও ভরাট করা হচ্ছে।

শহরের দাউদপুলের ওপর থেকে পাগলীছড়ার দৃশ্য এখন করুণ! দখল ও দূষণের ফলে এটি এখন মৃতপ্রায়। স্থানীয়রা বলছেন, এই ছড়ার প্রশস্ততা একসময় ছিলো ৩০ ফুটের বেশি, যেখানে চলতো নৌকা। নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পণ্যবাহী নৌকাগুলো এই ঘাটে ভিড়তো। এছাড়া দমদমা খালসহ বাকি খালগুলো ড্রেনে পরিণত হয়েছে।

একইভাবে ফেনী শহর থেকে গত দুই দশকে তিন শতাধিক জলাশয় বিলীন হয়েছে। খাল ও পানির প্রবাহগুলো ভরাট হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

ফেনীর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবদুল মাজেদ বলেন, জলাশয় না থাকলে বড় অগ্নি দুর্ঘটনার সময় কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়। এছাড়া ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেড়ে যায়। এজন্য জলাশয়গুলো রক্ষার উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।’

তবে শহরের রাজাঝির দিঘী, বিজয় সিংহ দিঘী ও অন্যান্য জলাশয়গুলোর সৌন্দর্যবর্ধন ও পানিপ্রবাহ ঠিক রাখার জন্য নানা উদ্যোগের কথা বলছেন ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী। আর দখল-দূষণের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছে পরিবেশ অধিদপ্তর।