গ্রামীণ কৃষি
কৃষি
0

বাংলাদেশের নিরাপদ সবজি নিতে আগ্রহী নেদারল্যান্ডস

সবজি উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয় হলেও রপ্তানিতে পিছিয়ে আছে। তাই দেশ-বিদেশের ভোক্তাদের জন্য আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে সবজি চাষ করছেন কৃষকরা।

বগুড়ার শিবগঞ্জে নিরাপদ সবজি চাষ প্রকল্প দেখতে সস্ত্রীক হাজির হয়েছেন নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স থাইজ ওয়াউড স্ট্রা। গ্রামের মেঠোপথে বিদেশি মানুষ দেখে এ সময় উৎসুক এলাকাবাসীর ভিড় দেখা যায়।

শিবগঞ্জের ভরিয়া গ্রামের চাষি সাইফুল ও তার সঙ্গীদের মডেল ফার্ম ঘুরে ঘুরে নিরাপদ সবজি উৎপাদন প্রক্রিয়া দেখেন তারা। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশের এমন নিরাপদ সবজি নিতে ইউরোপের বাজার কতটা আগ্রহী?

থাইজ ওয়াউড স্ট্রা বলেন, 'ইউরোপে সবজির বাজার খুবই ভালো। তবে এই মুহূর্তে সেখানে দাম অনেক বেশি। এজন্য কম মূল্যে ভালো সবজি ও ফলের যোগানদাতা খুঁজছি। আমরা এখানে টমেটো ও আলুর খামার পরিদর্শন করলাম। এই সবজিগুলোর মান খুবই ভালো এবং মূল্য কম। আমরা বাংলাদেশ থেকে চিংড়ি এবং আম ক্রয় করছি। ভবিষ্যতে টমেটো, আলু ও শসার মতো সবজি কিনবো।'

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে মাটি ও পানি পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, ২০২৩ সাল থেকে শিবগঞ্জের এই গ্রামে নিরাপদ সবজি চাষ হচ্ছে। আলু, টমেটো, করলার মতো শাকসবজি চাষে এখানে পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বালাইনাশক ছাড়াই চাষিরা সবজি উৎপাদন করছেন। এতে খরচ সাশ্রয়ের পাশাপাশি বেশি লাভ হচ্ছে।

কৃষকরা বলেন, 'আমরা জৈব ও গোবর সার দেই। এজন্য আমাদের খরচ কম হয়। মাটি পরীক্ষা অনুযায়ী যে পরিমাণ সার দেওয়া লাগে আমরা তা দিছি। ক্ষেতের চারিদিকে জাল লাগানো আছে।'

সৌর বিদ্যুৎ চালিত পরিবেশবান্ধব ফোটা সেচ পদ্ধতির মাধ্যমে মডেল ফার্মে সেচ দেওয়ায় পানির অপচয় কম হচ্ছে। এতে আর্থিক খরচ কমেছে। মূলত, সবজি রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের মাধ্যমে কৃষকদের আরও স্বচ্ছল করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আইএসসিএইচভি প্রকল্পের সাপ্লাই অ্যান্ড ভ্যালু চেইন কো অর্ডিনেটর শাহ জামাল চৌধুরী বলেন, 'আমাদেরকে একটি সনদপত্রের আওতায় আসতে হবে। যে সনদপত্র নিশ্চিত করবে এখানে কৃষি চর্চা অনুসরণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এই খাদ্যদ্রব্যে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক কোন উপাদান নেই।'

নিরাপদ সবজি উৎপাদন ও বাজারজাত প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি সংগঠন ওডিএসডি এবং অবলম্বন। বগুড়ার শিবগঞ্জ, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ি ও সাদুল্লাপুর উপজেলার ৫ হাজার কৃষক নিয়ে এই প্রকল্প চলছে।

আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী ১৯০টি ধাপ অনুসরণ করে এই অঞ্চলের কৃষকরা নিরাপদ সবজি উৎপাদনের চেষ্টা করছেন। তারা দেশের বাজারে নিরাপদ সবজি সরবরাহ করার পাশাপাশি দেশের বাইরে রপ্তানি করে বেশি আয় করতে চান।