উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

বিতর্কেও ভাটা পড়েনি ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা

বিতর্ককে সঙ্গী করেই নির্বাচনী দৌঁড়ে এগিয়ে যাচ্ছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

একদিকে ধর্ষণের মতো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, অন্যদিকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থীতার দৌঁড়ে নতুন করে জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিচ্ছেন। বিতর্ককে নিত্যসঙ্গী করে এভাবেই একের পর এক ঘটনার জন্ম দিয়ে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

চলতি শতাব্দীর প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনে পরাজয়ের পর অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, শেষ হয়ে গেছে ট্রাম্পের রাজনৈতিক জীবনের। কিন্তু চার বছরের ব্যবধানে উল্টে গেছে সমীকরণ। এমনকি, যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প জয়ী হলেও বিস্মিত হবেন না অনেকেই।

আবাসন ব্যবসায়ী থেকে রাতারাতি রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন ২০১৬ সালে। পরেরবার জো বাইডেনের কাছে হারের পর নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনেন ট্রাম্প। তার উস্কানিমূলক বক্তব্যের পর মার্কিন পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে নজিরবিহীন হামলা চালায় প্রায় দুই হাজার উগ্রপন্থী ট্রাম্প সমর্থক। দাঙ্গায় পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজনের প্রাণহানি আর ১৫ লাখ ডলারের আর্থিক ক্ষতি হয় মার্কিন প্রশাসনের। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুই দফা অভিশংসিত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনলেও ফলাফল উল্টে দেয়ার মামলায় উল্টো ট্রাম্পই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন মেইন ও কলোরাডো অঙ্গরাজ্যে। বাতিল হয়েছে দু'টি অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্পের প্রার্থিতা। তবে মিশিগান ও মিনেসোটায় খারিজ হয়েছে মামলা। এমন পরিস্থিতিতে আসছে নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প অংশ নিতে পারবেন কি না, শিগগিরই সে সিদ্ধান্ত জানাবে সুপ্রিম কোর্ট।

মার্কিন গণমাধ্যমে ইউএসএ টুডে'র তথ্যমতে, গেল তিন দশকে ৪ হাজারের ওপরে মামলা হয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। বর্তমানে চলমান আছে ৯০টি, যারমধ্যে উল্লেখযোগ্য ট্যাক্স ফাঁকি ও ঋণ নেয়ার জন্য সম্পদ গোপন, ক্ষমতা ছাড়ার সময় সরকারি নথি চুরির মামলা।

তবে ব্যক্তিটি হয়তো ট্রাম্প বলেই এত বিতর্ক ও সমালোচনার পরেও জনসমর্থনে ভাটা পড়েনি। রিপাবলিকান দলের প্রাইমারি নির্বাচনে ৮ দিনের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন আইওয়া ও নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যে। ট্রাম্পের ব্যাপক জয়প্রিয়তায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার দৌড় থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডি স্যান্টিস। দুটি অঙ্গরাজ্যেই ট্রাম্পের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী নিক্কি হ্যালি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, অভিবাসন বিরোধী হবার পাশাপাশি শেতাঙ্গদের পক্ষে কথা বলায় দিন দিন বাড়ছে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা।

লিহাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যান্থোনি ডিমাজ্জিও বলেন, 'গবেষণায় আমরা পেয়েছি এমন কিছু প্রসঙ্গ আছে যার জন্য এখনও অনেক মানুষ ট্রাম্পকে পছন্দ করে কিংবা ভোট দিতে চায়। এর মধ্যে প্রাধান্য পায় সামাজিক সমস্যাগুলো। যেমন অভিবাসন সমস্যা কিংবা সীমান্ত সুরক্ষার বিষয়গুলো।'

ইতিহাস গড়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন? নাকি আইনি জটিলতায় ছিটকে পড়বেন নির্বাচন থেকে, এখন সেটিরই অপেক্ষা।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর