বিদেশে এখন
0

ভাবমূর্তি সংকটে বোয়িং

বোয়িংয়ের ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের আলাস্কা এয়ারলাইন্সের একটি বিমানের দরজা উড়ে জরুরি অবতরণের পর থেকে সারাবিশ্বে আবারও তোপের মুখে পড়েছে এই বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।

ম্যাক্স সিরিজের বিমানের ক্ষেত্রে এই ধরনের দুর্ঘটনা নতুন করে বোয়িংকে বিতর্কে ফেলেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান পরিচালনা কর্তৃপক্ষ ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের বিমান তৈরি সাময়িকভাবে স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে। উৎপাদন সক্ষমতা বর্তমান সময়ের তুলনায় আর বাড়াতে পারবে না বোয়িং। এফএএ জানায়, বোয়িংকে বিমানের উৎপাদন বাড়ানোর অনুমতি আর দেয়া হবে না।

বিগত ৫ বছর ধরে উড্ডয়নে আস্থা হারাচ্ছে বোয়িং। প্রতিদ্বন্দ্বী ইউরোপের বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাসের সঙ্গে বাড়ছে শেয়ারের ব্যবধান। প্রতিবছরই কমছে বিমানের ক্রয়াদেশ আর সরবরাহের পরিমাণ। বিমানের মান ধরে রাখার পাশাপাশি মুনাফা করতেই বেগ পেতে হচ্ছে বোয়িংকে। আলাস্কা এয়ারলাইন্সের ১৬ হাজার ফিট ওপরে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৯ মডেলের বিমানের দরজা উড়ে যাওয়ার ঘটনায় বোয়িংয়ের সংকটে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সর্বাধিক বিক্রিত ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের বিমানের উৎপাদন বাড়িয়ে এয়ারবাসকে টেক্কা দেয়ার পরিকল্পনা বোয়িংয়ের। অভ্যন্তরীণভাবে গেল এক দশক ধরে গ্রাহকদের দ্রুত বিমান সরবরাহে গুরুত্ব দিচ্ছে বোয়িং। এক্ষেত্রে নির্বাহীরা বিমান তৈরিতে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের চাপ অনুমান করতে পারছেন না কোনভাবে। দ্রুত বিমান সরবরাহ করতে গিয়ে কাজ করতে হচ্ছে অনেক চাপ নিয়ে। ফলে বিমানে দেখা দিচ্ছে নানান ত্রুটি।

২০২৩ সালে বেশ কয়েকবারই এই প্রতিষ্ঠানের বিমানের মানদণ্ড নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এয়ারবাসের সঙ্গে টেক্কা দিতে ২০২৩ সালের অক্টোবরে বোয়িংয়ের প্রধান নির্বাহী ডেভিড কালহোন জানান, মাসে ম্যাক্স মডেলের ৩৮টি বিমান তৈরি করা হবে। কিন্তু এরপর বোয়িংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০২৪ আর ২০২৫ সালে উৎপাপদন সক্ষমতা আরও বাড়ানোর কথা। এ বিষয়ে বোয়িংয়ের প্রধান নির্বাহীকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়।

চলতি বছর বোয়িংয়ের ম্যাক্স মডেলের ১০০ বিমান সরবাহের কথা রয়েছে। বিশ্ববাজারে ভাবমূর্তি ধরে রাখতে বোয়িং জানায়, নিরাপত্তা নিশ্চিতে ৫ দফা পরিকল্পনা আছে তাদের। তবে পরির্দশক বাড়ানো হলেও তা অপ্রতুল। এখনও ম্যাক্স সিরিজের ৭৩৭-৭ আর ৭৩৭-১০ মডেলের বিমান উড্ডয়নের অনুমোদন পায়নি। এরপরও বোয়িং মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির প্রত্যাশা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা আর নিরাপত্তাজনিত পদক্ষেপ নিলে আবারও বোয়িংয়ে যাত্রীদের আস্থা ফিরবে।