স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত সবজি চলে যায় দেশের বিভিন্ন জেলায়। এ বছর জেলায় প্রায় ৫২৫ কোটি টাকা শীতকালীন সবজি বাণিজ্যের আশা কৃষি বিভাগের।
শষ্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত উত্তরের জেলা নওগাঁ। নওগাঁ সদর, বদলগাছী ও মহাদেবপুর উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলার মাঠে দেখা মিলবে শীতকালিন নানা জাতের শাকসবজি। এসব উপজেলায় শিম, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, লাউ, লালশাক ও পালংশাক সহ অন্তত ২৫-৩০ ধরণের শাকসবজি চাষাবাদ হচ্ছে।
নওগাঁ সদর উপজেলার শুকুর চাঁদপুর গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম এর চাষের জমি চার বিঘা। এ বছর ২ বিঘা জমিতে শিমের আবাদ করেছেন। প্রতি বিঘাতে খরচ হবে অন্তত ৪০-৪৫ হাজার টাকা। যেখানে শিম বিক্রি হবে বিঘা প্রতি লক্ষাধিক টাকা। চার বিঘা জমিতে বছর শেষে বেচাকেনা হয় অন্তত ৪ লাখ টাকা লাভ থাকবে প্রায় ২ লাখ টাকা।
স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব সবজি ব্যবসায়ীদের হাত ধরে চলে যায় দেশের বিভিন্ন জেলায়।
কৃষকরা বলছেন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় সবজি চাষ লাভজনক হলেও কীটনাশক ছাড়া এখন আর শাকসবজির চাষ কল্পনা করা যায় না।
চাষীরা জানান, আগে যে কীটনাশকের দাম ছিল ৯০ টাকা তার দাম এখন ১৫০ টাকা। সবজি চাষে প্রতি বিঘাতে কীটনাশকে খরচ পড়ে অন্তত ১২-১৪ হাজার টাকা। লাভের একটি অংশ চলে যায় কীটনাশক ব্যবহারে।
একমাত্র আলু ছাড়া অন্য কোন সবজি সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। সবজি সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় লোকসানের মুখে পড়তে হয়। সংরক্ষনের ব্যবস্থা থাকলে লাভবান হতে পারতো চাষীরা।
জেলায় ৯ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালিন বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে শাকসবজি চাষে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হয়। জেলায় প্রায় ৫২৫ কোটি টাকা শীতকালিন সবজি বাণিজ্যের আশা কৃষি বিভাগের।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ সবজি চাষীদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং দিক নির্দেশনা দিয়ে আসছে। সেক্ষেত্রে নওগাঁ জেলা শাকসবজি চাষের ভাণ্ডার বলা যায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় ১ লাখ ৩০ হাজার কৃষক শাকসবজির আবাদ করেছে। এ বছর ১ লাখ ৭৫ হাজার ১৩৪ টন শাকসবজি উৎপাদনের আশা। জনপ্রতি প্রতিদিন সবজির চাহিদা ২৫০ গ্রাম হিসেবে জেলার চাহিদা ৮৫ হাজার টন।