নদীবেষ্টিত জেলা চাঁদপুর। মেঘনার কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা এ জনপদে মিলিত হয়েছে পদ্মা আর ডাকাতিয়া নদী। ইলিশের রাজধানী খ্যাত এই জেলা মৎস্য খাত, খাদ্য উৎপাদনসহ প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ভূমিকা রাখছে জাতীয় অর্থনীতিতে।
১ হাজার ৭০৪ দশমিক ৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের চাঁদপুরে বইছে ভোটের হাওয়া। প্রায় ৩০ লাখ জনসংখ্যার এ জেলার ৫টি সংসদীয় আসনে ভোটার ২১ লাখ ৫৬ হাজার ৬০৯ জন। এর মধ্যে নতুন ভোটারের সংখ্যা ৩ লাখ ৫০ হাজার ৬৮৩।
জেলার তরুণ ভোটার প্রায় ৭০ শতাংশ। নির্বাচনে প্রার্থীদের জয়-পরাজয়ে বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন তারাই। রাষ্ট্র, সমাজে উন্নয়নে নতুন সরকার কাজ করবেন এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।
তরুণরা বলেন, 'পড়ালেখা শেষ করে নিজেদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মেয়েদের ইভটিজিং কমে আসার বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার জন্য কাজ করতে হবে। আমাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করবে এমন প্রতিনিধি চাই আমরা।'
ব্রিটিশ আমলের শুরুর দিকে মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর তীরে গড়ে উঠে পুরান বাজার বাণিজ্য কেন্দ্র। একসময় এখানকার নাম-ডাক ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়লেও কালের বিবর্তনে তা ফিকে হয়ে গিয়েছে। নদী ভাঙনসহ নানা সংকটে পাটকল, লবণ, ময়দা, ডাল মিলসহ নানা শিল্প প্রতিষ্ঠান হারিয়েছে তার জৌলুশ। যোগাযোগ সুবিধার পরেও গড়ে উঠেনি তেমন কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান।
চাঁদপুর শহর। ছবি : এখন টিভি
ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, এখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করলেও প্রতিকূল অবস্থার কারণে তারা করে না। অনুকূল পরিবেশ পেলে ব্যবসা গড়ে তুলবে। চাঁদপুরকে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার যে পরিকল্পনা আছে সরকারের, তার অংশ হিসেবে প্রবাসীরাও সেখানে সম্পৃক্ত হতে পারে।
তবে শহরতলীর বাবুরহাটে প্রতিষ্ঠিত বিসিক শিল্পনগরী, হাইমচর ও মতলব উত্তরে অনুমোদিত অর্থনৈতিক জোন, নির্মাণাধীন হাইটেক পার্ক নতুন দিনের আশার সঞ্চার করছে। পাশাপাশি চরাঞ্চলের কৃষি, নদীকেন্দ্রিক পর্যটন আর পরিকল্পিত শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা গেলে বদলে যাবে চাঁদপুরের অর্থনীতির চিত্র।
চাঁদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. দীপু মনি বলেন, 'স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কারিগর তরুণ প্রজন্ম। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের ২০৪১ সালের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করছে।'
চাঁদপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম ইসফাক আহসান বলেন, 'শিল্প কারখানা তৈরি করার ক্ষেত্রে আমরা এখানে ভালো সুযোগ সুবিধা দিতে পারব। কারণ নৌপথে বড় জাহাজে মালামাল আমদানি করা যাবে এখানে।'
তারুনদের চাহিদা আর অভিজ্ঞদের পরামর্শ কাজে লাগিয়ে চাঁদপুরের অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে আগামীর সংসদ সদস্যরা কতটুকু মনোনিবেশ করতে পারবেন তা দেখার অপেক্ষায় চাঁদপুরবাসি।