পরিবেশ ও জলবায়ু
বিদেশে এখন
0

জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে একমত বিশ্বনেতারা

Shahinur Sarkar

দুবাই জলবায়ু সম্মেলনে ১২৮ দেশের ঐতিহাসিক চুক্তি

দুই সপ্তাহের তর্কবিতর্ক ও বিশদ আলোচনা শেষে ধরিত্রীকে বাঁচাতে অবশেষে সম্পূর্ণভাবে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন বিশ্ব নেতারা। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত কপ-২৮ জলবায়ু সম্মেলনের শেষদিনে প্রথমবারের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর বিষয়ে একমত হয়েছেন ১৯৮টি দেশের প্রতিনিধি।

সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের সভাপতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের শিল্প ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী সুলতান আল জাবের। জানান, চুক্তিটি বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজন সবার সম্মিলিত পদক্ষেপ। বলেন, 'চুক্তি বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি, সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতের জন্য চুক্তিটি সুফল বয়ে আনবে।'

বিশ্বের ৮০ শতাংশ জ্বালানির জন্য নির্ভর করতে হয় তেল-গ্যাস-কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর। মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের কারণে প্রতিনিয়তই রেকর্ড ভাঙছে তাপমাত্রা। একদিকে মরুকরণের শিকার হচ্ছে বিশ্বের একপ্রান্তের মানুষ। অন্যদিকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে থাকায় সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব অনেকে। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনার বিষয়ে ১৯৮টি দেশের একমত হওয়াকে ঐতিহাসিক বলছেন বিশ্লেষকরা।

জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার। তবে বিশ্ব সম্প্রদায় থেকে প্রয়োজনীয় আর্থিক তহবিল বরাদ্দ করা না হলে বাংলাদেশের জন্য দ্রুতই এই পরিবর্তন সম্ভব নয় বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, 'জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর থেকে নির্ভরতা কাটাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এজন্য প্রয়োজন প্রযুক্তি সহায়তা ও বিনিয়োগ। কিন্তু আমরা এখনো তেমন কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করিনি।'

জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে একেবারে সরে না এসে ধীরে ধীরে কমানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন জলবায়ুকর্মীরা। তাদের অভিযোগ ত্রুটিযুক্ত চুক্তিটির কারণে তেল গ্যাস উত্তোলক প্রতিষ্ঠানগুলো সুযোগ পাবে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে।

দ্য সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল ডাইভার্সিটি'র ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জ্যাঁ সু বলেন, 'প্রায় তিন দশক পর জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর সিদ্ধান্ত ভালো ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে অন্যদিকে চুক্তিটিতে কিছু ফাঁক ফোকর আছে। যা তেল-গ্যাস ভিত্তিক ব্যবসা চালিয়ে যেতে সাহায্য করবে।'

বিশ্লেষকরা এবারের কপ-২৮ জলবায়ু সম্মেলনকে অভিহিত করছেন জীবাশ্ম জ্বালানি যুগের শেষের শুরু হিসেবে।

এসএসএস