ধীরে ধীরে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হচ্ছে পৃথিবী। একের পর এক দেশে ভাঙ্গছে তাপমাত্রার রেকর্ড। চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া কারণে বিপর্যস্ত জনজীবন। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণ বছরের রেকর্ড গড়লো ২০২৪ সাল।
ইউরোপের কপার্নিকাস ক্লাইমেট সার্ভিস এবং ব্রিটেন ও জাপানের আবহাওয়া দপ্তরের প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য। তিনটি সংস্থার প্রতিবেদন বলছে, গেল বছর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভূপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা ছিল দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। যা প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ২১০০ সাল নাগাদ ভূপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা ২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়ানোর শঙ্কা বিশ্লেষকদের।
বার্কলি আর্থ জলবায়ু বিজ্ঞানী জেক হসফাদার বলেন, ‘২০২৪ উষ্ণতম বছর ছিল। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে তাপমাত্রা বেড়েছে সেলসিয়াসের ১০ ভাগের একভাগ। টানা দুই বছর তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙ্গলো। প্রথমবারের মতো ভূপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।’
জীবাশ্ম জ্বালানির কারণে সৃষ্ট গ্রিন হাউজ গ্যাস ও এল নিনো চক্রের কারণে গেল বছর বৈরী ছিল আবহাওয়া। ২০২৫ সালে শুরু হয়েছে লা নিনা চক্র। এতে অতিবৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা ও ভারি তুষারপাত দেখা যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে।
তীব্র শীতের কবলে জাপান। পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে বেশ কিছু অঞ্চলে দৈনিক তুষারপাতের পরিমাণ ছাড়িয়েছে ২ মিটার। যা অন্য বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। জাপান সাগরে উইন্টার প্রেশারের পাশাপাশি তীব্র ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় ভারি তুষারপাত আরো কয়েকদিন চলার পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া দপ্তর। বৈরী আবহাওয়ার কারণে কয়েকটি শহরে বন্ধ রয়েছে রেল ও আকাশ যোগাযোগ ব্যবস্থা।
তুষারের চাদরে ঢেকে গেছে যুক্তরাজ্য। দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে ইয়েলো অ্যালার্ট। উত্তর ইংল্যান্ডে রাতের তাপমাত্রা মাইনাস ১৬ থেকে মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যাবার পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া দপ্তর। আগামী সপ্তাহর আগে পরিস্থিতি পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই। ওয়েলস, আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডেও দেখা গেছে ভারি তুষারপাত।
যুক্তরাজ্যের মতো একই পরিস্থিতি বেলজিয়ামে। বুধবার থেকে দেশটিতে জারি করা হয়েছে কোড ইয়েলো। ইতোমধ্যে তাপমাত্রা নেমেছে মাইনাস ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ফ্লাইট বিলম্বিত হলেও এখনো স্বাভাবিক সড়কপথ। এদিকে দেশটির পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের শহরগুলোয় বন্যা সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া বিভাগ।