করোনা সংকটে সংসারের হাল ধরতে অনলাইনে খাবার ব্যবসা শুরু করেছিলেন স্নাতক দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী পিয়াস। ক্রেতা আকৃষ্ট করতে নাম দিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়ি। এই নামেই বর্তমানে তার একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে জামালপুর শহরে। যা থেকে পিয়াসের মাসিক আয় লাখ টাকার কাছাকাছি। প্রস্তুতি নিচ্ছেন বড় পরিসরে আধুনিক রেস্টুরেন্ট করার।
পিয়াস এখন টেলিভিশনক বলেন, ‘আমাদের তৈরি করা বিদেশি খাবারগুলোর স্বাদ যারা বুঝেছে তারাই মূলত খাচ্ছে। একটা সময় হয়তো ঢাকার মত বড় পরিসরে বিক্রি করতে পারবো।'
তার মতো জেলার অনেক তরুণই এখন রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় আগ্রহী হচ্ছেন। জামালপুর জেলা সদরসহ ৭ উপজেলায় দৃষ্টিনন্দন প্রায় শতাধিক রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। রকমারি খাবারের স্বাদ নিতে এসব রেস্তোরাঁতে ছুটে আসেন ভোজন রসিকরা। রসনা বিলাসের সাথে পরিবার-পরিজন ও বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা চলে মধ্যরাত পর্যন্ত।
ভোজন বিলাসীরা জানান, ঢাকার তুলনায় যে জামালপুর পিছিয়ে নেই এই রেস্টুরেন্টগুলোই তার প্রমাণ। এ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান একসময় জামালপুরে কল্পনাতীত ছিল। খাবারের মানও ভালো।
রেস্তোরাঁর সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে চাহিদা বাড়ছে বাবুর্চি। বেতন ভালো পাওয়ায় অনেকেই আগ্রহী হয়ে আসছেন এই পেশায়। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়। কমেছে লাভের পরিমাণ।
বাবুর্চিরা বলেন, এখানে বেতন ২৮-৩০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এই কাজ থেকে একটা সংসার অনায়াসেই চালানো যায়।
এশিয়ান ফুড ভিলেজ ম্যানেজার মো. বেলাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের ব্যবসায়িক উন্নতিসহ জামালপুরের জীবনমান অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে।‘
জেলার অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে রেস্তোরাঁ ব্যবসা। তাই ব্যবসায়ীদের সুবিধায় সহজ শর্তে ঋণ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে এ খাত আরও সমৃদ্ধ হবে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
জামালপুর চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি মো: ইকরামুল হক নবীন বলেন, ‘রেস্টুরেন্ট খাতে বিনিয়োগের ব্যাপারে ব্যাংকগুলোর অনেক অনীহা রয়েছে। সরকারের এই দিকে মনোযোগী হওয়া উচিত। তাহলে উদ্যোক্তাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়বে।‘
সন্ধ্যা নামলেই শহরের সুসজ্জিত রেস্টুরেন্টগুলোতে জ্বলে বাহারি রঙের লাইট। এসব রেস্টুরেন্টকে ঘিরে জেলার অন্তত ৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।