দেশে এখন
0

শরীয়তপুরে মৌলিক সুবিধাবঞ্চিত চরাঞ্চলের মানুষ

পদ্মা, মেঘনা, জয়ন্তী আর কীর্তিনাশা নদী বিধৌত জেলা শরীয়তপুর। নদীর বুক জুড়ে রয়েছে ছোট বড় অন্তত ২০টি চর। জেলার জনগোষ্ঠির ২৫ শতাংশই বাস করেন এসব চরে। বিচ্ছিন্ন এসব জনপদে বসবাসকারিদের জন্য নেই নূন্যতম নাগরিক সুবিধা।

ভুক্তভোগী চরের মানুষজন বলেন, 'সরকারের চিকিৎসা কেন্দ্র আমাদের চর এলাকায় নেই। চিকিৎসার জন্য অনেক দূরে যেতে হয়। আমরা কোন ধরনের সহায়তা পাইনা।'

গোসাইরহাট কোদালপুরের ইউপি সদস্য মোঃ আলম বলেন, 'আগে সরকারি কর্মকর্তারা এখানে আসতো। তখন গর্ভকালীন মা ও শিশুর টিকা, প্রাথমিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা তারা পেতো।'

জেলার কয়েকটি চরে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও নেই মাধ্যমিক বা কলেজে পড়ার সুযোগ। তাই পঞ্চম শ্রেণিতে পাসের পর ঝরে পড়ছে অনেক শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীরা বলছে, কোন সুযোগ-সুবিধা না থাকায় তাদের পড়াশোনা হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে। উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তে পারলেও অনেকটা এগিয়ে যেতে পারতো তারা।

চরের বাসিন্দা মোকসেদা বেগম নদী ভাঙনের শিকার হয়ে বসতি গড়েছেন নড়িয়ার বসাকের চরে। ভাড়া জমিতে ৫ সন্তান নিয়ে বেশ কষ্টের সংসার তার।

তিনি বলেন, 'আমাদেরটা চর এলাকা হওয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীরা এখানে আসেন না। '

পলি সমৃদ্ধ প্রচুর অনাবাদি জমি রয়েছে চরগুলোতে। যেখানে রয়েছে নানা জাতের ফসল উৎপাদনের সম্ভাবনা। তবে সঠিক পরামর্শের অভাবে আধুনিক চাষ পদ্ধতির ছোঁয়া লাগেনি এখানে।

স্থানীয় এক কৃষক বলেছেন, 'কৃষি অফিসার এখানে আসেনা। আমরা যতটুকু বুঝি সেভাবেই চাষ করি।'

চরের বাসিন্দাদের সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতের আশ্বাস জেলা প্রশাসনের।

গোসাইরহাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফি বিন কবির বলেন, 'চরাঞ্চলে পরিবার পরিকল্পনা বা অন্যান্য বিভাগ গুলোর মাঠকর্মীরা নিয়মিত সেখানে যাচ্ছে কিনা তা তদারকি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কারো গাফিলতি থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন এখন টেলিভিশনকে বলেন, 'ইতিমধ্যেই বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। তারা অতিরিক্ত জনবল দেয়ার চেষ্টা করছেন। সেই সাথে আমাদের শূন্য পদগুলোও শীঘ্রই পূরণ করা হবে।'

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নিজেদের কর্মদক্ষতার মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে চায় চরাঞ্চলের মানুষজন।