পঞ্চগড় সদরের গরুহাটি এলাকার ক্ষুদ্র খামারি নুর আলম। পরিবারে একটু স্বচ্ছলতা আনার আশায় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে গড়ে তুলেছেন দুগ্ধ খামার। কিনেছিলেন ১০টি গরু। কিন্তু গো-খাদ্যের অসহনীয় দামে ধরে রাখতে পারেননি খামারের ব্যাপ্তি। একের পর এক বিক্রি করতে করতে বর্তমানে তার খামারে গাভীর সংখ্যা নেমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩ টিতে।
নুর আলম জানান, 'গরুর খাবারের দাম বেশি হওয়ায় গরু বিক্রি করে দিতে হয়েছে। ২ থেকে ৩ টা গরু রেখেছি এখন। আমাদের সরকারি পশু হাসপাতাল থেকে কোনো সুযোগ সুবিধা আমরা পাই না।'
ভালো নেই পঞ্চগড়ের বেশিরভাগ দুগ্ধ খামারি। তাদের দৈনিক উৎপাদিত হয় ১৮ থেকে ২০ হাজার লিটার দুধ। বিপরীতে স্থানীয় চাহিদা মাত্র ৭-৮ হাজার লিটার। লিটারে উৎপাদন খরচ ৫০-৫৫ টাকা । কিন্তু বাধ্য হয়ে মাত্র ৪৫ টাকাতে দুধ বিক্রি করছেন।
এক খামারি বলেন, 'গরুর খাবারের দাম বেড়েছে। কিন্তু দুধের দাম বাড়েনি।'
পঞ্চগড় মিল্কভিটার ল্যাব তত্ত্বাবধায়ক আমিনুল হক জানান, 'আমাদের দুধ ধারণক্ষমতা ৫ হাজার ৫০০ লিটার। আমরা প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশ মতো প্রতিদিন ৭৫০ লিটার দুধ সংগ্রহ করছি। খামারিরা এসে আমাদের অনুরোধ করার পরেও আমরা দুধ নিতে পারছি না।'
খামারিদের অভিযোগ, প্রাণিসম্পদ বিভাগ বড় খামারিদের সহায়তা করে। কিন্তু ছোট খামারিরা থাকছেন অবহেলায়। কর্মকর্তাদের ডাকলেই গুণতে হয় মোটা অংকের টাকা। এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
পঞ্চগড় সদর ইউএলও ডা. শহিদুল ইসলাম বলেন, 'আমরা কখনো বলি না আমাদের টাকা না দিলে যাবো না। এই শব্দটা কখনো উচ্চারণ করেছি বলে আমার মনে হয় না।'
প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, নির্মাণাধীন ডেইরি হাবটি চালু হলে সংকট অনেকটাই কমে আসবে। এ প্রকল্পে থাকবে মিল্ক কালেকশন পয়েন্ট। বিকল্প গোখাদ্য উৎপাদনে খামারিদের দেয়া হবে প্রশিক্ষণ।
জেলায় বর্তামানে দুগ্ধ খামারের সংখ্যা ২৩৭টি। যেখানে গাভীর সংখ্যা প্রায় ৩ হাজারের বেশি। বছরে এসব খামার থেকে ৩০ কোটি টাকার দুধ বিক্রি হয়।