প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে নিত্যদিন সংগ্রাম করে চলতে হয় সুনামগঞ্জের কৃষকদের। এখানকার কৃষি ও অর্থনীতি বারবারই ধাক্কা খায় বন্যায়। চলতি বছরও তিন দফা বন্যায় সুনামগঞ্জের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বর্তমানে জেলায় বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও দুশ্চিন্তাও রয়েছে, এরমাঝেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ব্যস্ত হাওর পাড়ের কৃষকরা। তাদেরই একজন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার আরশাদ আলী। বন্যায় ঘরবাড়ি ও ফসল বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কষ্ট বুকে চেপে নতুন উদ্যমে মাঠে নেমেছেন তিনি।
আরশাদ আলী বলেন, ‘জালা কিনে এনেছি। জমি তো আর পতিত রাখা যাবে না। খেত তো করা লাগবে।’
রশাদ আলীর মতোই জেলার ১২ উপজেলার প্রায় ৩ লাখ কৃষক আমন ধান রোপণে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করছেন। কৃষকরা বলছেন, প্রতিবছর বন্যায় ফসলের ক্ষতি হলেও কৃষি বিভাগ থেকে তেমন সহায়তা মিলছে না। এছাড়া বর্তমানে আমন ধানের আবাদে বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে সার বীজ।
হাওরের কৃষকরা জানান, ‘বন্যায় প্রতিবছরই ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এবারের বন্যায় দুই তিনবারের বেশি পানি ঢুকেছে। কামলার খরচও দেয়া যাচ্ছে না, জালারও অনেক দাম।’
তবে কৃষি বিভাগ বলছে, মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্যে সার-বীজ কিনতে পারেন সে জন্য বাজারে নজরদারি রয়েছে।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, ইতিমধ্যে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। এবং আমরা তাদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি, যাতে তারা এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেন। আমাদের মাঠ পর্যায়ের সব কর্মকর্তা সব সময় কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত থেকে সব ধরণের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন।’
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছর সুনামগঞ্জে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৩ হাজার ৩শ' হেক্টর। যা থেকে ধানের উৎপাদন হবে ২ লাখ ১৪ হাজার টন। আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে প্রায় হাজার কোটি টাকার রোপা আমন ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা।