ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের গুপ্তমুন্সী গ্রামের বাদশা মিয়া। তপ্ত দুপুরে তীব্র রোদ উপেক্ষা করেই ১২ শতাংশ জমিতে বোরো আবাদের জন্য মাঠ তৈরি করছেন। চাষ উপযোগী করতে হালচাষ দিয়ে প্রথম ধাপ শেষ করলেও পানির অভাবে বোরোর চারা রোপণের উপযোগী করতে পারছেন না।
একই অবস্থা গ্রামের বহু কৃষকের। বাদশা মিয়া বলেন, 'পানির অভাবে সব ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। আমার ২৫-৩০ হাজার টাকার লোকসান হচ্ছে।'
জানা যায়, গত বছরের মে মাসে সড়ক ও জনপদ বিভাগ রাস্তার উপর সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি সরিয়ে নেয়। কাজ শেষে খুঁটি পুনঃস্থাপন না করায় বিদ্যুৎ সরবরাহও চালু হয়নি। ফলে খালে পর্যাপ্ত পানি থাকলেও বিদ্যুতের অভাবে পাশ্ববর্তী জমিতে সেচের পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না।
এক কৃষক জানান, 'ম্যানেজারকে আমরা বলছি সে বলছে আমাদেরকে বিদ্যুৎ দেয় না। এ কারণে পানি দিতে পারছি না।' আরেকজন বলেন, 'পল্লী বিদ্যুতের খামখেয়ালির কারণে দেড় শতাধিক কৃষক কৃষিকাজ করতে পারছেন না। দ্রুত বিদ্যুৎ লাইন দিয়ে পানির ব্যবস্থা করা হোক।'
সেচ প্রকল্পের পরিচালকের কাছেও মেলেনি এর সমাধান। তবে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা দ্রুতই সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছেন।
রহমান সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার আব্দুর রহমান বলেন, 'অন্তত চারমাস আগে বিদ্যুতের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু তিনমাস ধরে বিদ্যুৎ অফিসে ঘুরাঘুরি করার পরেও বিদ্যুৎ পাওয়া যায়নি । বিভিন্ন সময় বিভিন্ন তারিখ দিয়ে আমাকে হয়রানি করে। এজন্য আমি সেচ দিতে পারছি না।'
ভোলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার এ বি এম মোস্তফা কামাল বলেন, 'কৃষি বিভাগ থেকে প্রণোদনা, বীজ ও সার বিতরণ করেছি তারা বীজতলা তৈরি করেছে। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার কারণে তারা রোপণ করতে পারছে না। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে জোর দাবি জানাচ্ছি দ্রুত যেন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়।'
যদিও খুঁটি পুনঃস্থাপনের কাজ যাদের, সেই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিও বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে নারাজ।
সঠিক সময়ে সেচের ব্যবস্থা করতে না পারলে ক্ষতি সামলানো কঠিন হবে, তাই এখনই এর সমাধান চান স্থানীয় কৃষকরা।