গ্রামীণ কৃষি
কৃষি
আলুর নতুন জাতে কমবে উৎপাদন খরচ
আলুর লেইট ব্লাইট রোগ প্রতিরোধী নতুন জাত উদ্ভাবনে সফলতা পেয়েছে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। এতে আলু উৎপাদনে খরচ কমার পাশাপাশি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে কৃষকরা।

তাই থ্রি আর জিন সমৃদ্ধ নাবি ধ্বসা রোগ প্রতিরোধী জাতেরও পরীক্ষামূলক চাষ চলছে। কোন কীটনাশক বা ওষুধ না দিলেও গাছগুলো সতেজ ও সবল থাকছে। দেশে সর্বাধিক প্রচলিত 'ডায়মন্ট' আলুর ওপর দুবছর গবেষণা চালানোর পর এই মৌসুমে প্রথম বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) সফলতা পেয়েছে।

২০২১ সালে গবেষণা শুরু হলেও চলতি মৌসুমে বারি প্রথম পরীক্ষামূলক চাষ করেছে। গাজীপুর, রংপুর, মুন্সিগঞ্জে এবং হাটহাজারিতে এই পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি বলছে আরও দুই বছর পরীক্ষামূলক চাষ করার পর সেটার ফলাফল দেখে পরিবেশ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

তারা পুরো গবেষণা দেখে সন্তুষ্ট হলে সারাদেশে চাষের অনুমতি মিলবে। যেহেতু দেশের ৫০ শতাংশের বেশি 'ডায়মন্ট' আলুর চাষ হয় তাই এটাকে এখন পর্যন্ত জাতটির নতুন সংস্করণ বলা হচ্ছে। পরবর্তীতে কৃষি বিভাগ চাইলে নতুন জাত হিসেবে সম্প্রসারণ করতে পারে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, 'এটা আলুর বন্য প্রজাতি। এটাকে পৃথক করে আমাদের প্রচলিত জাতগুলোর ভেতরে প্রবেশ করানো হয়েছে। তাই যতই আবহাওয়ার পরিবর্তিত হোক ঐ রোগটি আর হবে না। এরকম প্রচেষ্টা আমাদের অব্যাহত থাকবে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনে কৃষিকে এগিয়ে নিতে হলে এগুলো করতে হবে।'

নতুন আলুর জাত উদ্ভাবনে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষকরা

মূলত বুনো আলু থেকে জিন সংগ্রহ করে দেশের বহুল প্রচলিত ডায়মন্ড আলুতে এই গবেষণা চালিয়েছে বারি। জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে এই গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় বারিকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে।

ইউএসএআইডির অর্থায়নে বারি এবং মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যোগাযোগে কাজ করেছে ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশ ও ফিড দ্য ফিউচার নামের দুটি বেসরকারি সংস্থা।

চারায় কোন বালাইনাশক প্রয়োগ করতে হবে না বলে থ্রি আর জিন প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষকের উৎপাদন খরচ বেঁচে যাবে। ফসল রোগমুক্ত হলে কৃষক বাড়তি লাভের মুখ দেখতে পারবেন বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. হামিদুর রহমান। বলেন, 'কৃষকের মূল লক্ষ্য হলো উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে লাভবান হওয়া। সুতরাং সেটি করতে গেলে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট যে কাজটি করেছে, তা যদি দ্রুত সম্প্রসারণ করতে পারি তাহলে অত্র এলাকার কৃষক লাভবান হবে।'

শীত মৌসুমে শৈত্য প্রবাহ, অতিরিক্ত কুয়াশা, সূর্যের আলো পর্যাপ্ত না থাকার কারণে আলুতে লেইট ব্লাইট দেখা দেয়। পরিবেশের ওপর কারও হাত না থাকায় রোগ প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবন বেশি জরুরি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। আর থ্রি আর জিন প্রয়োগের ফলে এখন পর্যন্ত ক্ষতিকারক কিছু পাওয়া যায়নি। এদিকে এখন পর্যন্ত ১০৬টি জাতের আলু উদ্ভাবন করেছে বারি।

এভিএস