মাছের পোনার জন্য সুপরিচিত বগুড়ার কাহালু উপজেলা। বংশপরম্পরায় এখানকার অন্তত ৪০ হাজার মানুষ জড়িত এই কাজে। সারাদেশের মাছ চাষিদের ভরসার এই জায়গায় মাসে বিক্রি হতো প্রায় ৫০ কোটি টাকার মাছের পোনা।
তবে, হালে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হওয়া আর টানা তাপপ্রবাহ দুর্বিপাকে ফেলেছে ব্যবসায়ীদের। নদী-নালা, খাল-বিল-পুকুর, জলাশয়ে পানি না থাকায় কমে গেছে মাছের পোনার চাহিদা। এতে আশঙ্কাজনকহারে কমেছে বিক্রি।
মাছ চাষিদের একজন বলেন, 'বৃষ্টি না হওয়াতে মাছের পোনা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাছের বিক্রি কমে গিয়েছে।'
বেচাকেনা যখন এমন হাল, তখনও চড়া পোনা উৎপাদনে ব্যবহৃত খাদ্য আর ওষুধের দাম। তাই খরচের সঙ্গে লাভের হিসাব মেলাতে পারছেন না উৎপাদকরা। উল্টো বাড়ছে ক্ষতির অংক।
মাছ চাষিদের আরেকজন বলেন, 'মাছের পোনার ওষুধের দাম বেড়ে গিয়েছে আগে যেটা ছিল ২০০ টাকা প্যাকেট তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩শ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ টাকায়।'
অনাবৃষ্টি আর খড়ার পাশাপাশি পোনার খাদ্য আর ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি যখন পোনা চাষিদের বিপাকে ফেলেছে তখন ভালো খবরের মধ্যে এতটুকুই যে, বগুড়ার কাহালুর মাছের পোনার বেশ কদর বেড়েছে পাশের দেশ ভারতের বাজারে।
পোনা রপ্তানিকারক আশরাফুজ্জামান বলেন, 'বিশেষ করে বগুড়া, নাটোর, নওগাঁ থেকে এলসির মাছ যায় ভারতে সর্বনিম্ন প্রতিমাসে ৪০ গাড়ি।'
বগুড়া জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালি পদ রায় বলেন, 'তাদের রপ্তানির প্রক্রিয়া মসৃণ না। এদের রপ্তানি করতে গেলে ৫ থেকে ৬ দফা কাগজের পিছে দৌঁড়াতে হয়।'
এদিকে মৎস্য বিভাগ বলছে, পুকুরে ভূগর্ভস্থ পানি সরবরাহ, খাবারের পরিমাণ কমানোসহ তাপপ্রবাহ চলাকালে পোনাচাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, 'ভূগর্ভস্থ পানি সরবরাহ করা প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট। ভূগর্ভস্থ পানি সরবরাহ করলে তাপপ্রবাহের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচতে পারবে।'
গত বছর কাহালু ও আদমদিঘী উপজেলাসহ বগুড়ার চাষিরা প্রায় ৬৩ কোটির বেশি পোনা বিক্রি করে আয় করেছেন ১০৮ কোটি টাকার বেশি।