দেশে এখন , মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ
কৃষি

নওগাঁয় কমছে ফসলি জমি, কৃষক ঝুঁকছে মাছ চাষে

শস্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁয় কমছে ফসলি জমি। ধানের চেয়ে মাছ চাষ লাভজনক হওয়ায় পুকুর খননের দিকে ঝুঁকছেন চাষিরা। এতে তৈরি হচ্ছে খাদ্য ঘাটতির শঙ্কা।

ধান উৎপাদনের জন্য খ্যাতি রয়েছে নওগাঁর রানীনগর, আত্রাই, মান্দা, মহাদেবপুর ও সদর উপজেলার। এসব এলাকায় বছরের অনেকটা সময় পানি জমে থাকায় কোথাও একবার কোথাও দুবার ধানের আবাদ হয়। তবে বৈরি আবহাওয়ায় প্রতিবছর ফসল ঘরে তোলা নিয়ে পড়তে হয় বিড়ম্বনায়।

বছরের পর বছর এমন হওয়ায় ফসলি জমিতে পুকুর খনন করে মাছ চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। ফলে প্রতিবছরই কমছে আবাদ। জেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, গত ৫ বছরে বেড়েছে ২৪৬টি পুকুর। স্থানীয়রা বলছেন আরও বেশি।

স্থানীয়দের একজন বলেন, 'ধানের মধ্যে খুব একটা লাভ নেই। মাছ চাষে অধিক লাভ হচ্ছে।'

আত্রাই উপজেলার বড়কালিকাপুর গ্রামের কৃষক চাঁন মোল্লা। বছরে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করতেন। তবে এলাকাবাসীকে দেখে মাছ চাষে আগ্রহ বাড়ে। সেই আগ্রহ থেকে ৩৬ বিঘা জমিতে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছেন। যেখান থেকে খরচ বাদ দিয়ে তার বছরে লাভ অন্তত ১৫ লাখ টাকা।

চাঁন মোল্লা বলেন, 'আমরা কৃষি মানুষ মোটামুটি ৩০ থেকে ৪০ বিঘার মতো আবাদ করি। ধান ভালো না হওয়ায় পুকুর কেটে মাছ চাষ করা হচ্ছে।'

কৃষকরা বলছেন, ৫ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করে বছরে লাভ ৫০ হাজার টাকার মত। সেখানে মাছ চাষে লাভ অন্তত ২ লাখ টাকা। এজন্য ধানের আবাদ ছেড়ে বাড়ছে পুকুর খনন। ৫ বছর আগেও যেসব জমির ইজারা ছিল বছরে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। সেখানে মাছ চাষের জন্য ইজারা বেড়ে হয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।

প্রতি বছর বিভিন্ন কারণে ০.৬৯ শতাংশ হারে কমছে আবাদি জমি। তাতে আগামীতে খাদ্য ঘাটতির শঙ্কা রয়েছে। তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের ফসলের উৎপাদন বেশি হওয়ায় একই জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদন হচ্ছে বলছে কৃষি বিভাগ।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'আমরা সরকারি বিভাগ কঠোর নজরদারি ভিতর রেখেছি বিষয়গুলো।'

পুকুর খনন থেকে কৃষি জমি রক্ষায় আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের দাবি স্থানীয়দের।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর