আনন্দ বাজারের জেলে পল্লীতে বসবাস করা জেলে বিল্লাল হোসেন তার আদরের দুই সন্তানকে কথা দিয়েছিলেন এই ঈদে কিনে দিবে তাদের পছন্দের পোশাক। তবে ধার দেনা করে চলা সংসারে যেখানে দুবেলা খাবার যোগানোর নিশ্চয়তা নেই। সেখানে অধরাই রয়ে গেল স্ত্রী-সন্তানদের নতুন কাপড় কিনে দেয়ার স্বপ্ন। ঈদের দিনে ভাল একটু খাবার জুটবে কিনা তা নিয়েও দ্বিধাদ্বন্দ্বে জেলে পত্নী পারভিন বেগম। অর্থাভাবে ঈদের আনন্দ ছুঁয়ে যায় না তাদের ঘরে।
বিল্লাল বলেন, 'সবার একটা আশা থাকে সন্তাদের নতুন জামা কিনে দিবে। কিন্তু এবারের দুইমাসের অভিযানের কারণে কারো জন্য কিছুই কেনা হয়নি।'
এমন অবস্থা চাঁদপুর সদর উপজেলার পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি জেলে পরিবারের। জাটকা রক্ষায় চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের ৬টি ইলিশের অভয়াশ্রমে চলছে নিষেধাজ্ঞা। এ সময় আয়ের পথ বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবন কাটছে। অনেকেই জানালেন, এবারের ঈদে পরিবারের জন্য কিছুই কিনতে পারেন নি।
জেলেরা আরও জানান, ৪০ কেজি চালে তাদের সংসার চলে না। সেমাই, চিনি নিজেরা কিনতে পারে না, তাই সন্তানদেরকেও দিতে পারে না।
জেলায় এ বছর নিবন্ধিত ৪০ হাজার ৫ জন জেলেকে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময় ও আগে-পরে মোট ৪ মাস ৪০ কেজি করে চাল দেয়া হবে। এরই মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ২ মাসের চাল। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান মৎস্যজীবী নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের।
চাঁদপুরের কান্ট্রি ফিসিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি মো. শাহ আলম মল্লিক বলেন, 'সরকারিভাবে যেন তারা ঈদ উৎযাপন করতে পারে। তাদেরকে একটা সহায়তা প্রদান করার পাশাপাশি আমাদের সমাজে যারা বিত্তবান আছেন তারা যেন জেলেদের ঈদ উদযাপনের সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসে।'
চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী বলেন, 'সরকারে কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি চালের পাশাপাশি জেলেদেরকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া যায় তাহলে জেলেরা স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদ পালন করতে পারবে।'
গত পহেলা মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকা মাছ রক্ষায় চলছে ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা।