দেশে এখন
কৃষি
চার কোটি টাকার রাবার ড্যাম অকেজো
কৃষি সেচ ব্যবস্থাপনায় কাজে আসছে না ফেনীর পরশুরামে সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাবার ড্যাম। অযত্ন অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে অবকাঠামো। নেই সংস্কারের উদ্যোগ। কৃষি বিভাগ বলছে, ড্যামটি সচল করা গেলে উপকৃত হবে এই অঞ্চলের কৃষক। বাড়বে ফসলের উৎপাদন।

২০০৬ সালে ফেনীর পরশুরামের বেড়াবাড়িয়া এলাকায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় রাবার ড্যাম। এরপর শুষ্ক মৌসুমে আবাদের আওতায় আসে অন্তত চার হাজার হেক্টর জমি। কিন্তু দুই বছর পর এটি অকেজো হয়ে যায়। এরপর থেকে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে চাষাবাদ করলেও ফসলি জমির বড় একটি অংশ হয়ে পড়ে অনাবাদী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পাউবো কর্তৃপক্ষ কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই পরশুরামের বেড়াবাড়িয়ায় রাবার ড্যামটি নির্মাণ করেছে। ভৌগোলিকভাবেই ফুলগাজী উপজেলার তুলনায় পরশুরাম উপজেলা উঁচু। বোরো মৌসুমে পরশুরামে রাবার ড্যামটি ফোলানো হলে ফুলগাজী এলাকায় কহুয়া নদীতে পানি পাওয়া যায় না। এতে বোরো মৌসুমে তৈরি হয় সংকট। এ অবস্থায় কিছু চাষি নিজ উদ্যোগে ইঞ্জিনচালিত সেচ বসিয়ে চাষাবাদ করলেও বিস্তীর্ণ এলাকা থাকে অনাবাদী।

চাষিরা বলেন, 'রাবার ড্যাম সরকার করছে কিন্তু এটাতে আমাদের কোনো কাজ হচ্ছে না।'

আরেকজন বলেন, 'রাবার ড্যাম সরকার করছে করার পরে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে অকেজো হয়ে পড়েছে। ১০-১২ বছরে কৃষকরা এতটুকু পানিও পায়নি।'

কৃষি বিভাগ বলছে, বোরো মৌসুমে রাবার ড্যামটি ব্যবহার উপযোগী করা হলে প্রায় ৬০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা যাবে।

ফেনীর পরশুরাম উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেবাঞ্জন বনিক বলেন, 'পুনঃসংস্কারের অভাবে কৃষক একটু ক্ষতিগ্রস্ত। পুনরায় যদি আরও সংস্কার করা হয় তাহলে কৃষক এতে উপকৃত হবে।  এ ব্যাপারে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মহোদয়গণ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন।'

তবে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, রাবার ড্যামটি সচল আছে। কিন্তু এটি সংস্কার করলে পরশুরামের কৃষক খুশি হলেও ফুলগাজী অংশের কৃষক পানি না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। ফলে এই সংকট তৈরি হয়েছে। সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস পাউবোর।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান ভুঁঞা বলেন, 'রাবার ড্যামটি যথাযথভাবে হয়েছে। কিন্তু ২০০৮-১০ সালের প্রেক্ষাপটের সাথে এখনকার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। উজানের পানি অনেক কমে যাওয়াতে পানির প্রবাহ কম এখন।আমরা আশা করছি নদী খননের প্রজেক্টের পরে এই সমস্যা আর থাকবে না।'

ডিপিপি প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় সাড়ে ৫৪ মিটার দৈর্ঘ্যের ড্যামটি। এর মাধ্যমে আটকানো যায় ১০-১৫ ফুট পানি। যা দিয়ে শুষ্ক মৌসুমেও আবাদ শুরু হয় বেড়াবাড়িয়া, সাতকুচিয়া, সলিয়া, উত্তর গুতুমা, কোলাপাড়া ও বাসপদুয়া গ্রামের বিস্তীর্ণ জমিতে।

ইএ