এখন জনপদে
0

দখল-দূষণে মৃতপ্রায় নওগাঁর তুলসীগঙ্গা নদী

তুলসীগঙ্গা নদী, যে নদীর খরস্রোতা পানির ধারা একসময় আশপাশের জমিকে করতো উর্বর, জেলেদের জীবিকা নির্বাহ করতো সহজ। আজ সেই নদী হারিয়েছে তার রূপ। নওগাঁ সদর উপজেলার তিলোকপুর ইউনিয়ন থেকে রানীনগর উপজেলার ত্রিমোহনী পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদী দখল আর দূষণে এখন মৃতপ্রায়।

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা থেকে সৃষ্টি হয়ে তুলসীগঙ্গা নদী নওগাঁর সীমানায় প্রবেশ করেছে। এ নদীর পানিতে সচ্ছল ছিল এলাকার গ্রামীণ জীবন। জেলার ব্যবসায়ীরা নৌকায় ধান ও পাটসহ বিভিন্ন কৃষি পণ্য নিয়ে ব্যবসা করতো হাট-বাজারে। গত ৩ বছর আগে নদীটি খনন করা হলেও আসছে না কোন কাজে, জমছে কচুরিপানার স্তূপ।

সত্তরের দশকে ছিটকিতলায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পরই নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে তা নিস্তেজ। দুর্গন্ধ যুক্ত পানিতে বাড়ছে মশা-মাছির উপদ্রব। সেই বাঁধ সরিয়ে স্লুইসগেট নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের মতে, এতে ছোট যমুনার সাথে সংযোগ স্থাপন হলে বর্ষায় পানি প্রবাহ বজায় থাকবে।

নওগাঁ বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক নাইচ পারভীন বলেন, ‘ অবৈধ স্থাপনার পাশাপাশি ময়লা আবর্জনার স্তূপ সব নদীতে ফেলার বন্ধ করে নদী পরিষ্কার না করলে নদীকে সচল রাখা সম্ভব হবে না।’

এই নদী নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ইতোমধ্যে ছোট যমুনার সাথে তুলসীগঙ্গার সংযোগ স্থাপন ও রেগুলেটর নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো। বরাদ্দ পেলেই শুরু হবে কাজ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়জুর রহমান বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে সবুজপাতায় অন্তর্ভুক্তের জন্য তুলসী গঙ্গা ও ছোট যমুনা যেখানে মিলেছে সেখানে একটা রেগুলেটর তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে।’

তুলসীগঙ্গার স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে সরকারের কার্যকর উদ্যোগই পারে নদীকে পুনরুজ্জীবিত করতে। নদী বাঁচলে বাঁচবে কৃষি, পরিবেশ এবং মানুষের জীবন।

এএম