কুয়াকাটাকে বলা হয় সাগরকন্যা। এই সমুদ্র সৈকতের দৈর্ঘ্য ১৮ কিলোমিটার। এটি দেশের একমাত্র সমুদ্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়। যে সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিনিয়তই ভিড় জমান পর্যটকরা।
হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষ বলছে, আগত পর্যটকদের বেশিরভাগই মাত্র একদিনের ভ্রমণ শেষে ফিরে যান। এতে স্থানীয় পর্যটনে বিনিয়োগ তুলনায় আশানুরূপ লাভবান হচ্ছেন না পর্যটন খাতে বিনিয়োগকারীরা। কুয়াকাটা থেকে সুন্দরবনের কটকাসহ আশপাশের অল্প দূরত্বের স্পটে
কুয়াকাটা খান প্যালেসের জেনারেল ম্যানেজার ফজলুল করিম ইমন বলেন, ‘অনেক বিনিয়োগ বেড়েছে নতুন নতুন হোটেল হচ্ছে কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দর্শনার্থীরা এক বা দুই দিনের বেশি থাকছেন না। সেক্ষেত্রে আমরা মনে করি যে কুয়াকাটায় যদি আরো কিছু ভ্রমণ স্পট বাড়ানো যেত তাহলে আরো দর্শনার্থী আমরা আকৃষ্ট করতে পারতাম।’
কুয়াকাটার ডি' মোর হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট অপারেশন ম্যানেজার জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘সুন্দরবনের কটকা ও চর বিজয় এরিয়ায় পর্যটন বিভাগ যদি নিজস্ব তত্ত্বাবধায়নে একটা ট্যুরের ব্যবস্থা করে তাহলে যেসব পর্যটক আসে তারা দুইদিনে বেশি সময় থাকবে কারণ এ জায়গায় ট্যুর করতে প্রায় দুইদিন লেগে যায়।’
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে পশ্চিম দিকে সুন্দরবন। কুয়াকাটা থেকে সাগর পথে এর দূরত্ব আড়াই থেকে ৩ ঘণ্টা। সমুদ্রপথে কটকা পৌঁছে আবার খাল নদী হয়ে কুয়াকাটায় ফিরে আসা যায়। ঘোরা ফেরা ও যাতায়াতে সময় লাগে ১ দিনের মত। তাই সুন্দরবনের কটকায় খুব শিগগিরই পর্যটকদের জন্য নৌ যান চালুর চেষ্টা চলছে বলে জানায় টোয়াক সভাপতি।
ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ‘সমুদ্র ও বনের অভিজ্ঞতা দেয়ার জন্য আমরা ইতোমধ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। যার প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে। বাকি যেসব কাজ রয়েছে এগুলো মূলত প্রশাসনিক কাজ’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতকে পর্যটনবান্ধব করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সমুদ্র চলাচল উপযোগী জাহাজ পেলেই কুয়াকাটা থেকে সুন্দরবন ভ্রমণ শুরু হবে।
পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘সমুদ্র উপযোগী জাহাজের ক্ষেত্রে যারা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা আছেন তারা জোড়ার করে চালু করলেই কিন্তু রুট শুরু করা সম্ভব। এছাড়া অন্যান্য সরকারি যেসব অনুমোদনের বিষয় রয়েছে সেগুলো কাজ হয়ে গিয়েছে।’
কুয়াকাটায় বর্তমানে প্রায় ৯০টি বিভিন্ন শ্রেণির হোটেল মোটেল নির্মাণাধীন রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধশত হোটেল একেবারে নতুন। বাকি ৪০ টি হোটেল সম্প্রসারণের কাজ চলছে। কুয়াকাটার সাথে রাজধানীসহ সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের পর হোটেল মোটেল খাতে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।