সমস্যা-সীমাবদ্ধতায় ধুঁকছে দেশের ব্যাডমিন্টন; ফেডারেশন বলছে ‘ফান্ডের অভাব’

বিভিন্ন সমস্যা ও সীমাবদ্ধতায় ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন
বিভিন্ন সমস্যা ও সীমাবদ্ধতায় ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন | ছবি: এখন টিভি
0

অবকাঠামোগত সমস্যা, অনুশীলনের অপ্রতুলতা ও কোচিংয়ের সীমাবদ্ধতায় ধুঁকছে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা ব্যাডমিন্টন। আন্তর্জাতিক সাফল্যের ক্ষেত্রে এখনো বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা নিয়ে এগোতে হচ্ছে দেশের শাটলারদের। এদিকে ব্যাডমিন্টন না এগোনোর পেছনের কারণ হিসেবে ফেডারশন দায়ী করছে ফান্ড ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবকে।

দেশের ব্যাডমিন্টনে করুণ অবস্থা। পর্যাপ্ত অনুশীলনের সল্পতা, নিয়মিত ঘরোয়া লিগ না হওয়ায় পিছিয়ে পড়ছে দেশের শাটলাররা। দেশের আনাচে কানাচে প্রতিভাবান খেলোয়াড় থাকলেও নেই পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অনেক ইনডোর কোর্টই এখনো আন্তর্জাতিক মানের নয়। আধুনিকায়নের দিক থেকে বেশ খানিকটা পিছিয়ে দেশের ব্যাডমিন্টন।

প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেও আছে বড় বাধা। দেশের বেশিরভাগ শাটলার নিয়মিত কোচিং পেলেও নেই আধুনিক ট্রেনিং সুবিধা ভিজ্যুয়াল অ্যানালাইসিস, ফিজিও থেরাপি, বা স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং ক্যাম্প।

সীমিত সুযোগ সুবিধার মাঝেও কানাডা ওপেনে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছেন দেশের শাটলাররা। ইতিবাচক দিক হলো, ২০২৫ সালে এরই মধ্যে ১০ টি টুর্নামেন্ট খেলে ফেলেছেন শাটলাররা। পরবর্তী বছরেও এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে মিলবে সরাসরি অলিম্পিকের টিকিট।

বাংলাদেশের শাটলার ওহিদুল বলেন, ‘বছরে ১০ থেকে ১২টা টুর্নামেন্ট আমাদের খেলতে হবে। আমরা এ বছরে এখন পর্যন্ত ৮টি খেলেছি, বাংলাদেশে ২টা আছে ১৬ তারিখ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত। তো ১০টি হবে আরকি। সামনে বছরেও যদি আমরা এটা কন্টিনিউ করতে পারি, তাহলে আমরা অলিম্পিক খেলার সুযোগটা পাবো।’

নারী খেলোয়াড়দের জন্য চ্যালেঞ্জ আরও বেশি। নিরাপদ ট্রেনিং পরিবেশ, অভিজ্ঞ মহিলা কোচ এবং পরিবারিক সমর্থন সবই সীমিত। তবুও সাম্প্রতিক সময়ে উঠে আসছে বেশ কিছু প্রতিভাবান শাটলার।

আরও পড়ুন:

বাংলাদেশি শাটলার উর্মি বলেন, ‘যেহেতু আমরা মেয়ে মানুষ, আমাদের তো বাধা-প্রতিবন্ধকতা থাকবেই। এলাকা থেকেও সৈবসময় খারাপভাবে দেখতো, যে মেয়ে মানুষ ট্র্যাকশুট, ছেলেদের ড্রেস পরে। এরকম অনেক কথাবার্তা হতো, শুনতাম। কখনো এগুলো কানে নেইনি। বাবা-মা ও পরিবারের সাপোর্ট ছিল, তো ওইভাবেই উঠে আসা। বাইরে নিজের টাকায় খেলা আসলে আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’

শাটলার নাসিমা বলেন, ‘প্রথম যখন খেলা শুরু করি, তখন যেহেতু আমি মেয়ে, আমার খেলা গ্রামে ভালো চোখে দেখতো না। অনেক কথাই বলতো, তবে বাড়ির লোকের সাপোর্ট ছিল, এর জন্য প্র্যাক্টিস করে যেতে পেরেছি।’

যথারীতি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব আর আর্থিক সংকটকেই দায়ী করলেন ফেডারেশনের এ কর্তা।

বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাসেল কবির সুমন বলেন, ‘আমরা তো আমাদের ফান্ড দিয়ে এসএ গেমস করেছিলাম। আমাদের বলা হয়েছিল, বাইরের কোচ আনলে সেটার পেমেন্ট করবে এনএসসি, এরকম। তো আমরা কোচ আনছি, তিন মাস করছি, এসএ গেমস হয়নি, কিন্তু সেটা তো আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে করেছি ফেডারেশন থেকে। সেই ফান্ড কিন্তু এখনও আমরা পাইনি।’

বাংলাদেশি শাটলারদের সম্ভাবনা অনেক। প্রয়োজন শুধু আধুনিক সুবিধা, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং ধারাবাহিক পৃষ্ঠপোষকতা। তাহলেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও উজ্জ্বল হতে পারে লাল–সবুজের ব্যাডমিন্টন।

এসএইচ