দেশের বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশন যেন কয়েকজন সংগঠকের হাতের মুঠোয় বন্দী। বছরের পর বছর ধরে পদ আঁকড়ে ছিলেন কিছু সংগঠক। ফলে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে ফেডারেশনগুলো।
তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ক্রীড়াঙ্গনেও পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে। তারই অংশ হিসেবে শুরুতেই সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ভেঙে দেয়া হয় পুরোনো কমিটিগুলো, দায়িত্ব দেয়া হয় অ্যাডহক কমিটিকে। আর সেখানেও নতুনত্বের ছোঁয়া। প্রথমবার ফেডারেশনগুলোর কমিটিতে এসেছেন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
প্রথম দফায় নয়টি ফেডারেশনের কমিটি নিয়োগ দেয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। তার মধ্যে ব্রিজ, বাস্কেটবল, টেনিস ও এথলেটিক্স ফেডারেশনে এসেছেন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
জাতীয় দলের জার্সি গায়ে বাস্কেটবল কোর্ট মাতিয়েছেন অনিরুদ্ধ বর্ণ। এখনও খেলছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দলে। এবার তার কাঁধে চেপেছে ফেডারেশনের দায়িত্বও।
অনিরুদ্ধ বর্ণ বলেন, 'বর্তমানে জিনিসটা আমি এনজয় করছি। কারণ আমার আগে থেকেই প্ল্যান ছিল আমি ক্রীড়া ক্ষেত্রেই থাকবো। চেয়েছিলাম দীর্ঘদিন পেশাগতভাবে খেলেই যাবো। কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি এই সুযোগটা আসছে। চেষ্টা করবো এটা ভালো কিছু করার।'
দেশের ক্রীড়াঙ্গনে অপরিচিত হলেও পুরোনো খেলা ব্রিজ। কার্ড দিয়ে খেলা হয় বলে অনেক নেতিবাচক ধারণা থাকলেও এ খেলার বিশ্বকাপেও অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। এই ফেডারেশনের প্রতিনিধি হিসেবে এসেছেন বুয়েট শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান সুমন।
তিনি বলেন, 'জুলাই পরবর্তী প্রেক্ষাপটে যেকোনো জায়গাতে শিক্ষার্থীদের যে একটা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমরা লক্ষ্য করছি এটাকে সাধুবাদ জানাই। এবং ব্রিজে আমি শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে চেষ্টা করবো যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই ব্রিজ খেলা বা ডুব্লিকেট ব্রিজ খেলাটা আরও কীভাবে সম্প্রসারণ করা যায়।'
ইনডোর গেমস হওয়ায় দু'টি ডিসিপ্লিনই নির্দিষ্ট গণ্ডিতে বন্দী। তবে দুই তরুণের কণ্ঠেই খেলাগুলোকে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্য।
অনিরুদ্ধ বর্ণ বলেন, 'ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনায় হাতেগোণা কয়েকটা বিভাগীয় জেলায় যারা শখ করে বা পছন্দ করে এই খেলাটাকে তারাই নরমালি খেলে থাকে। আমার পরবর্তী টার্গেট থাকবে এই খেলাটাকে আরও পেশাদারিত্বের মধ্যে নিয়ে আসা।'
মাহমুদুল হাসান সুমন বলেন, 'ব্রিজে আসলে বিভিন্ন জেনারেশন ব্যাসিসে ব্রিজ ফেডারেশনে আসেন বা ব্রিজ খেলেন। সেক্ষেত্রে ২০১৪-১৫ এরপর ব্রিজে একদমই এই যে নতুন যে খেলোয়াড়গুলো বিশেষ করে ভার্সিটি কেন্দ্রিক যে খেলোয়াড়গুলো আসতেন তাদের আসার ফ্লোটা একদম কমে গিয়েছে। আমাদের চেষ্টা থাকবে ব্রিজটাতে শিক্ষার্থী আরও কীভাবে সম্পৃক্ত করা যায় সে ব্যাপারে।'
শিক্ষার্থীদের হাত ধরেই উড়েছে নতুন বাংলাদেশের ঝান্ডা। ক্রীড়াঙ্গনে তারা কেমন ভূমিকা রাখবেন তা সময়ই বলে দিবে।