৫ আগস্ট, ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর, অনেক স্থানের মতো ভাঙচুর চলে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা আবাহনী ক্লাবে। চলে লুটপাটও।
লুটের তালিকা থেকে বাদ যায়নি ৫২ বছরে অর্জিত স্মারক ট্রফিগুলোও। সাবেকরা ট্রফি ফিরিয়ে দেয়ার আকুতিও জানিয়েছিলেন। তবে, এখন অব্দি ট্রফির শোকেস শূন্যই।
এক মাসের বেশি সময় পার হলেও ভাঙচুরের পর ক্লাব ভবনের তেমন কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। প্রশাসনিক কক্ষও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি। সংস্কার কাজ যে ঢিমেতালে চলছে, ছবিতেই তা পরিষ্কার। আর আগামী মাসে ফুটবল মৌসুম শুরুর কথা থাকলেও কর্তাদের কারোরই দেখা মিললো না সে ভবনে।
নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া ক্লাব সংশ্লিষ্ট যে ২-১ জন ছিলেন। তারা খেলোয়াড়দের সহায়তায় কাজ করে থাকেন । চাকরি হারানোর ভয়ে তাদের কেউই টেলিভিশন ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হননি।
দেশের প্রথম ক্লাব হিসেবে পূর্নাঙ্গ ক্রীড়া কমপ্লেক্স তৈরির কাজ হাতে নিয়েছিলো আবাহনী। ২০১১ সালে ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করলেও কাজের তেমন অগ্রগতি হয়নি। গেল কয়েকবছর তোড়জোর করে কাজ চালালেও তা আলোর মুখ দেখেনি। তবে, ৫ আগস্টের পর মুখ থুবড়ে পড়েছে সেই প্রকল্প।
আবাহনীর এই স্থবিরতার বড় কারণ, ক্লাবটির পরিচালনা পর্ষদে আছেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন রাজনীতিবিদ। যার কারণে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ক্লাবটির বেশিরভাগ পরিচালক চলে গেছেন আত্মগোপনে। কেউ আবার হত্যা মামলায় রয়েছেন কারাগারে। । এমন পরিস্থিতিতে ক্লাবটির ভবিষ্যত সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়নি।
ক্লাবের দুঃসময় দেখে ব্যথিত আবাহনীতে ক্যারিয়ারের সিংহভাগ সময় পার করা আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু। পরিচালকদের নিয়ে বিস্তুর অভিযোগ কিংবদন্তী এই ফুটবলারের।
ক্লাবের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত আবাহনীর হয়ে পাঁচ বার ঢাকা লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা শেখ মো. আসলাম।
ঢাকা আবাহনী সাবেক ফুটবলার আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু বলেন, 'যারা পরিচালক ছিলেন তারা কেউ পলাতক, দূরে সরে আছেন। অনেকে আছে যারা সুবিধা নিছেন কিন্তু এখন ক্লাবের দিকে তাকাচ্ছেন না। আমাদের কাছে টাকা চেয়েছিল আমরা বলেছি এখন দিতে পারবো না। ক্লাবকে আমরা শ্রম দিয়েছি, মেধা দিয়েছি এমনকি জেলও খেটেছি।'
তবে, ক্লাবকে এগিয়ে নিতে সবসময় পাশে থাকার কথা সাবেক দুই ফুটবলারের কন্ঠে। ঢাকা আবাহনী'র সাবেক ফুটবলার শেখ মো. আসলাম জানান, 'আবাহনীর যে ঐতিয্য , ক্রীড়াঙ্গনে তাদের যে অবদান। কিন্তু সেটা আগের মত ফিরে আসবে কিনা সন্দেহ। তবে আমরা অবশ্যই আবাহনী ক্লাবের পাশে আছি।'