বিশ্বের সব দেশেই কম বেশি ফুটবল একাডেমি রয়েছে। সেটা না থাকলে হয়তো পেলে-ম্যারাডোনা কিংবা মেসি-রোনালদো জন্মাতো না। সাধারণ নাম থেকে অসাধারণ হয়ে এক একটা ব্র্যান্ড কিংবা প্রজন্মের আইকন হিসেবে বিশ্বব্যাপী আলো কাড়ার পেছনে যেমন রয়েছে সান্তোস-নাপোলি কিংবা বার্সা-রিয়ালের মতো ক্লাব। একইভাবে সে ক্লাবগুলোতে পরিপূর্ণভাবে তাদের তৈরি করে দিতে অবদান রেখেছে শত শত ফুটবল একাডেমি।
তবে ফুটবল পাগল লাল সবুজের দেশে একাডেমি হাতেগোনা কয়েকটি। তা থেকেও সেভাবে বের হন না ভালো মানের স্ট্রাইকার, ডিফেন্ডার বা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার।
এই যেমন, বেসরকারি উদ্যোগে গড়া উঠা ৪৩ বছরের দীর্ঘ পুরোনো আরামবাগ ফুটবল একাডেমি। যেখানে শিক্ষার্থীদের খরচ হয় খুবই সামান্য। ৭ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের সপ্তাহের ছয়দিন অনুশীললের সুযোগের পরিবর্তে মাসে গুণতে হয় মাত্র পাঁচশো টাকা।
বাফুফের লাইসেন্সধারী কোচরা কোচিং করান এই একাডেমিতে। তাই আরামবাগ একাডেমি সাশ্রয়ী হওয়ায় সেখানে নিজের সন্তানদের দেয়ার ঝোঁক বেশি অভিভাবকদের।
তারা বলেন, বাচ্চারা সপ্তাহে ৬ দিন প্র্যাকটিস করতে পারছে। মাত্র ৫০০ টাকার মধ্যে খুবই ভালো একটা পরিবেশের মধ্যে বাচ্চাকে রাখতে পারছি। এই একাডেমির সার্ভিসও ভালো। ভর্তি ফি ২ হাজার টাকার সাথে দুই সেট কমপ্লিট জার্সি দেওয়া হয়।
একেবারই উল্টো চিত্র দেশের ফুটবলের অভিভাবক সংস্থার। দেশের ফুটবলের ইতিহাসে দীর্ঘদিন পর হলেও নিজেদের উদ্যোগে বাফুফে ফুটবল একাডেমি শুরু করেছে গেলো বছরের মাঝামাঝিতে। ঢাকায় ৮০ জন শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাফুফে টার্ফে শুরু হওয়া একাডেমির পরিধি বাড়াতে খুব বেশি সময় নেয়নি ফেডারেশন। একাডেমির নতুন সংযোজন রাজশাহী, সিলেট আর খুলনা।
১০ জন বাড়িয়ে ৯০ জনের বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার টাকা। আর ভর্তি ফি দুই হাজার টাকাতো আছেই। শিক্ষার্থীদের বেতনের প্রায় অর্ধেকই খরচ হবে কোচের সম্মানিতে। বিনিময়ে শিক্ষার্থীরা পাবেন জার্সি আর তিনদিনের অনুশীলনের সুযোগ। তাই প্রশ্ন উঠছে, আরামবাগের মতো বেসরকারি একাডেমি এত কম খরচে চালাতে পারলে বাফুফে কেন পারছে না?
বাফুফে ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক বলেন, 'শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে টাকা পাচ্ছি তাতে কম পড়লে আমরা নিজেদের হাত থেকে খরচ করছি। প্রোগ্রামটা যেভাবে এগোচ্ছে হয়তো আগামীতে ভালো কোনো স্পন্সর পাবো। তবেই সারাদেশে এটা ছড়িয়ে দিতে পারবো।'
একটা দেশের ফুটবল ভিত মজবুত করতে প্রয়োজন একাডেমি। সে দায়িত্ব দেশের ফুটবলের অভিভাবক বাফুফে নিলেও সঠিক পরিকল্পনায় না আগালে খুব বেশি কাজে আসবে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।