চান্ডিকা হাথুরুসিংহে কখনও হয়েছেন নায়ক কখনও বা খলনায়ক। সে যাই হোক শ্রীলঙ্কান এই কোচের নামটা বাংলাদেশ ক্রিকেটে এখন অতীত। দুই দফায় বাংলাদেশের কোচ হিসেবে নিয়োগ পান এই শ্রীলঙ্কান। কিন্তু প্রথম দফার মতো দ্বিতীয়বারেও হাথুরুর অধ্যায় শেষ হলো মাঝপথেই।
স্বেচ্ছাচারিতা ও ছোট-বড় অনেক কারণের পাশাপাশি সবশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে জাতীয় দলের ক্রিকেটার নাসুম আহমেদকে চড় মারার অভিযোগও ছিল চান্ডিকা হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে। তাহলে কী এ কারণেই হাথুরুর এমন বিদায়? বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ অবশ্য ক্রিকেটারের নাম খোলাসা না করলেও স্বীকার করেছেন ঘটনার সত্যতা।
তিনি বলেন, ‘হিট অব দ্য মোমেন্টে কিছু জিনিস হতে পারে। কিন্তু ফিজিক্যাল অ্যাসল্টটা আসলে কোনো পর্যায়েই হতে পারে না। একটা জাতীয় দলের খেলোয়াড়কে আপনি এটা করতে পারবেন না।’
বিস্তর অভিযোগ থাকলেও হাথুরুই দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সফলতম কোচ। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০১৭ এর চ্যাম্পিয়ন্স সেমিফাইনাল, ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়াকে টেস্ট হারানো কিংবা পাকিস্তান সিরিজে ইতিহাস গড়া জয় হাথুরুর পক্ষেই কথা বলবে।
সাফল্যের বিপরীতে কোচ হিসেবে রেকর্ড পরিমাণ অর্থও নিয়েছেন হাথুরু। মাসিক বেতন ৩৫ লাখ টাকার উপরে, পাশাপাশি বাৎসরিক বিমান ভাড়া বাবদ প্রায় ২৫ লাখ টাকার সাথে অন্যান্য অনেক সুবিধাও পেয়েছেন এই শ্রীলঙ্কান কোচ। আর সেই সুবিধার অপব্যবহারও করেছেন তিনি।
ফারুক আহমেদ বলেন, ‘সে যে সময়টা কাটিয়েছে সেটা অতিরিক্ত তিন মাসের বেশি। ওইটাও কিন্তু পার্ট অব মিস কন্ডাক্ট। এখানে দু'টি জিনিস হয়েছে। একটা হলো মিসকন্ডাক্ট উইথ দ্য প্লেয়ার এবং মিসকন্ডাক্ট অ্যাজ অ্যা ইমপ্লয়ি।’
মেয়াদপূর্ণ হওয়ার আগেই চাকরিচ্যুত হওয়ায় চুক্তি অনুযায়ী তিন মাসের বেতন পাওয়ার কথা হাথুরুর। কিন্তু বোর্ড সভাপতি বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘একটা পেইড লিভ থাকে, আবার আনপেইড লিভও। কিন্তু নোটিফাই করতে হয় বোর্ডকে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এটা হয়নি।’
সাফল্যে হাথুরু সবার সেরা কিন্তু গুরু হিসেবে আদর্শ কিনা সে প্রশ্ন থেকেই যাবে। কিন্তু হাথুরুকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া কিংবা হাথুরুসিংহে যদি সুবিধার অপব্যবহার করেই থাকেন সে ব্যাপারে কেন সুরাহা করা হলো না সে দায় কি বোর্ডও এড়াতে পারবে?