আলো স্বল্পতায় চতুর্থ দিনের খেলা আগেভাগেই শেষ- তবে ঠিকই আলো ছড়িয়ে রাওয়ালপিন্ডিতে ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেটে দুই যুগের যাত্রায় ইনিংসে প্রথমবার পেসারদের ১০ উইকেট শিকার। স্পিন নির্ভরতা কাটিয়ে লাল বলে পেসারদের এই নৈপুণ্য সিরিজ জয়ের পাশাপাশি পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার হাতছানি মিরাজ-লিটনদের সামনে।
বিদেশের মাটিতে টেস্ট ক্রিকেটে টাইগারদের অনেকেই ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে প্রশংসিত হয়েছেন বিভিন্ন সময়। তবে পাকিস্তান সফরের বাংলাদেশ যেনো আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় একবারে ভিন্ন এক দল। এই দলটা টেস্ট ক্রিকেটের টেম্পারমেন্ট বোঝে, জানে ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটলে কিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়। এই দলটা জানে চাপ সামলে কিভাবে চড়াও হতে হয় প্রতিপক্ষের উপর, লিখতে হয় বীরত্বগাঁথা।
প্রথম ইনিংসে বিদেশের মাটিতে মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ২৬ রানে ৬ উইকেট। মিরাজের কাউন্টার এ্যাটাক আর লিটন দাসের মহাকাব্যিক সেঞ্চুরীতে ম্যাচে বাংলাদেশের ইউটার্ন। নাহিদ রানার দুর্দান্ত গতি-লেন্থ ও বাউন্সময় স্পেল কিংবা হাসান মাহমুদের ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেট শিকার। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের জন্যও সুন্দরতম পারফরম্যান্স হিসেবে যেকোনো একটা পারফরম্যান্সকে আলাদা করা হবে কঠিনতম কাজ।
২৪ বছরের টেস্ট যাত্রায় বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত টেস্ট সিরিজ জিতেছে ৮টি। টেস্ট সিরিজ জয় ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। আর বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০০৯ সালে তবে সেটা ছিল উইন্ডিজের দ্বিতীয় সারির দল। একারণেই পাকিস্তান সিরিজ নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের উন্মাদনা ছাড়িয়েছে আগের সব সিরিজকে।
শেষ বিকেলে ওপেনার জাকির হাসানের টি-টোয়েন্টি সুলভ ব্যাটিংয়ে জয়ের লক্ষ্যটা এখন অনেকটাই সহজ বাংলাদেশের জন্য। রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চম দিনে ইতিহাস গড়তে বাংলাদেশের প্রয়োজন আর ১৪৩ রান। যদিও পাকিস্তান বরাবরই আনপ্রেডিক্টবল দল। তবে আত্মবিশ্বাসী টাইগাদের সিরিজ জয় বা বাংলাওয়াশের আনন্দে বড় বা একমাত্র বাঁধা হতে পারে রাওয়ালপিন্ডির আবহাওয়া। একদিকে মিরাজ-লিটনদের উদযাপনের মঞ্চ তৈরি আর অন্যদিকে বৃষ্টির ভিলেন হবার পায়তারায় এখন দেখার পালা, পঞ্চম দিনে আনন্দঘন সমাপ্তি নাকি ট্র্যাজেডি অপেক্ষ করছে।