ক্রিকেট
এখন মাঠে
0

ক্রিকেট ক্লাবের বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা বকেয়ার অভিযোগ

ঘরোয়া ক্রিকেটারদের কান্না শোনার যেন কেউ নেই। আয়ের একমাত্র উৎস ক্রিকেট হলেও সময়মতো পাওনা বুঝে পান না তারা। যাদের কাছে বিচার চাইবেন, তারাও বসে আছেন ভক্ষক হয়ে।

ক্রিকেট যেদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা, যেখানে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থের আভাস, সেই একই খেলার শীর্ষ ঘরোয়া আসর খেলেও অর্থাভাবে ভুগছেন ক্রিকেটাররা!

দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের নতুন মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। তবে এখনও আগের মৌসুমের অর্থ বুঝে পাননি বেশ কয়েকটি দলের খেলোয়াড়রা।

দেশের অন্যতম পুরনো ক্লাব ব্রাদার্স ইউনিয়নের কোন ক্রিকেটারই গত মৌসুমের পুরো পাওনা বুঝে পাননি। কেউ পাননি চুক্তির ৫০ শতাংশ অর্থ, আবার কেউ ৩০ শতাংশ। আবার কেউ পাননি ৮০ শতাংশেরও বেশি টাকা।

ক্রিকেটার মিজানুর রহমান বলেন, 'আমাদের টাকা পরিশোধ না করলে আমরা কেউ মাঠে নামবো না। তখন আজম নাসিম সাহেব বলেছে তোমাদের এ নিয়ে চিন্তা করার দরকার নাই। আমরা তোমাদের টাকা দিয়ে দিবো। কিন্তু অর্থ পাই নাই।'

সাকলাইন সজীব বলেন, 'প্রতি বছরই ২-৩ লাখ টাকা করে বকেয়া রাখে। চার বছরে প্রায় ১০-১৫ লাখ হয়ে যায়। এ টাকাটা পাই নাই।'

তবে এ ক্লাবের ম্যানেজার আমিন খানের অভিযোগের তীর ক্লাবের আরেক কর্মকর্তার দিকে। বলেন, 'বরিশাল ফরচুনের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমানের সঙ্গে চুক্তি ছিল মেয়াদকালীন সময়ে যে কয়টা মৌসুম হবে, উনি তাতে ৭০ শতাংশ টাকার ব্যয়ভার বহন করবে। কিন্তু শেষ দুইবছর যাবত উনি টাকা দিচ্ছেন না। এর জন্যই ঝামেলাটা সৃষ্টি হয়েছে।'

একইভাবে প্রিমিয়ার লিগের দল রূপগঞ্জ টাইগার্স, অগ্রণী ব্যাংকের ক্রিকেটাররাও বুঝে পাননি নিজেদের পাওনা টাকা।

জাতীয় দলের ক্রিকেটার নাঈম ইসলাম বলেন, 'ক্রিকেটটা কিন্তু আমাদের পেশা। আমরা অন্য কোন জব বা বিজনেস করি না। এটার উপর যদি এমন বাধা এসে পড়ে তাহলে আমার সঙ্গে আরও অনেকেই ভোগান্তিতে পড়ে। একজন খেলোয়াড়ের জন্য এটা খুব কষ্টদায়ক।'

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের আয়োজক সিসিডিএম। ক্রিকেটাররা তাদের সমস্ত দুঃখ-কষ্ট কিংবা অভিযোগ তাদের কাছেই বলার কথা। তবে অবাক করা বিষয় হলো, সিসিডিএমের চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন চৌধুরী আবার রূপগঞ্জ টাইগার্স দলের কর্ণধার। এ ক্লাবেরও ৫-৬ জন ক্রিকেটার পাননি তাদের পুরো পাওনা। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উল্টো ক্রিকেটারদেরকেই দুষলেন এই কর্তা।

সালাহউদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'আপনারা যেমন আমাদের প্রশ্ন করেন প্লেয়ারদের টাকা কেন দিলেন না? আপনারা খেলোয়াড়দের প্রশ্ন করেন, তোমরা যে ৪০ লাখ, ৪৫ লাখ টাকা টাকা পেমেন্ট নিলা কী খেললা? কী সার্ভিস দিলা টিমকে? একটা খেলোয়াড়কে যখন আমরা ৩০ লাখ টাকা দিবো, তারপর আমরা সুপার লিগ খেলতে পারবো না, রেলিগেশন খেলবো তখন আপনাদের ফিডব্যাকটা কী আমাদের প্রতি?'

ক্রিকেটারদের স্বার্থ রক্ষা সংগঠন ক্রিকেটারস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (কোয়াব)। একের পর এক তারা ধর্ণা দিচ্ছে সিসিডিএম থেকে বিসিবির শীর্ষ কর্তাদের দরবারে। তবে এখনো সুরাহা করতে পারেনি বলে জানান সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল। বলেন, 'আমরা বিসিবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। এ ব্যাপারে বিসিবি নির্বাহী কর্মকর্তা অবগত আছেন।'

কবে নাগাদ বা কার কাছে গেলে মিলবে নিজেদের পাওনা টাকা, জানেন না ক্রিকেটাররা। কিন্তু প্রিমিয়ার লিগে কোটি টাকা বিনিয়োগ করা ক্লাবগুলোর বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা পরিশোধ না করার অভিযোগ নতুন নয়।

এভিএস