বিশ্ব ক্রিকেটে ফ্যাব ফোর বা ফ্যান্টাস্টিক ফোর নামে খ্যাত বিরাট কোহলি, কেইন উইলিয়ামসন, জো রুট ও স্টিভ স্মিথ। ক্রিকেটের তিন সংস্করণে সমান দক্ষতা ও দলকে জেতানোর অসামান্য অবদানের কারণে তাদেরকে এই নামে ডাকেন ক্রিকেট পন্ডিতরা।
এক যুগেরও বেশি সময় বিশ্ব ক্রিকেট শাসন করেছেন তারা। তবে সবকিছুরই শেষ আছে। আধুনিক ক্রিকেটের ফ্যান্টাস্টিক ফোরের বিশ্বকাপ যাত্রা থামছে এবারই।
ফিটনেস আর ফর্ম দু'টোই ধরে রাখলেও, ৩৫ বছর বয়সী কোহলিকে পরের বিশ্বকাপে আশা করা এক প্রকার বাতুলতা। নিজের শেষ বিশ্বকাপ বলেই হয়তো সর্বোচ্চটুকু নিংড়ে দিয়েছেন কিং কোহলি। একের পর এক রেকর্ড গড়েছেন।
স্বদেশী কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়েছেন ওয়ানডের সেঞ্চুরিতে, এক আসরে সর্বোচ্চ রানের হিসাবেও। বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছেন ২০১১ সালে, তবে এবারের বিশ্বকাপটা রাঙালেন একেবারে নিজের মত করে।
ফ্যান্টাসটিক ফোরের আরো দু'জন পেয়েছেন বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ। ২০১৫ তে স্টিভ স্মিথ আর ২০১৯ সালে জো রুট নিজদেশের হয়ে জেতেন বিশ্বকাপ। তবে এই তালিকার একমাত্র হতভাগা কেইন উইলিয়ামসন। দু'টো ফাইনাল খেলেও, বিশ্বজয়ের স্বাদ পাননি এই কিউই তারকা।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন এমন অনেকেই এবার খেলে ফেললেন নিজের শেষ বিশ্বকাপ। এই তালিকায় আছেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মাও। ২০১১ বিশ্বকাপজয়ী দলে সুযোগ পাননি। এবার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে ফাইনালে তুলেও, পারেননি ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে। এক বুক হতাশা নিয়েই এই মঞ্চকে বিদায় বলতে হচ্ছে হিটম্যানকে।
২০১৫ সালে টুর্নামেন্ট সেরা হয়ে দলকে বিশ্বকাপ জেতানো তরুণ মিচেল স্টার্ক এখন বুড়ো ঘোড়া। আর ক'বছর হয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবেন। তবে ৩৩ বছর বয়সী স্টার্ককে পরের বিশ্বকাপে পাওয়া যাবে না নিশ্চিত। একইভাবে বিশ্বকাপ জয়ী ওয়ার্নার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, জশ হ্যাজেলউডদেরও পরের বিশ্বকাপে পাওয়া যাবে না নিশ্চিতভাবে বলাই যায়।
সবচেয়ে বড় ঝড়টা গেছে ইংল্যান্ডের ওপর দিয়ে। উনিশের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা এবারের আসরে একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে। ফলে পুরো দলটাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে ইংলিশ বোর্ড। আর সে হিসেবে এবারের আসরে থাকা ১৫ জনের স্কোয়াডের অন্তত ১১ জন যে আগামী বিশ্বকাপে থাকছেন না সেটি নিশ্চিত। বাদ পড়াদের তালিকায় আছেন জশ বাটলার, জনি বেয়ারস্টো, মঈন আলী, বেন স্টোকসদের মত তারকারাও।
বিশ্বকাপের আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রোটিয়া তারকা কুইন্টন ডি কক। নিজের শেষ বিশ্বকাপটায় খেলছিলেনও অসাধারণ। কিন্তু বরাবরের মত সেমিতে হোঁচট খায় চোকার্স খ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকা। ডি ককেরও সব স্বপ্ন পুড়ে ছাই। তার সঙ্গে ডেভিড মিলার, ফন ডার ডুসেনদেরও বিশ্বকাপ যাত্রা থামছে এখানেই।
বাংলাদেশের সাকিব-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরাও তাদের শেষ আসর খেলে ফেলেছেন এবারই।
বিশ্বকাপে তারকাদের পদচারণা থাকবেই, তবে নিশ্চিতভাবেই এসব ক্রিকেটারদের মিস করবে সমর্থকরা।