অর্থনীতি , পরিষেবা
বিশেষ প্রতিবেদন
0

বিদ্যুৎ-জ্বালানি আইন বাতিলের পরও চলমান দুর্নীতির প্রকল্প, বহাল তবিয়তে সংশ্লিষ্টরা

দ্রুত বিদ্যুৎ-জ্বালানি সরবরাহ আইন ২০১০ বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে আইন বাতিল হলেও চলমান এ আইনের অধীনে করা দুর্নীতির প্রকল্প, আর বহাল তবিয়তে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও। তাই আইন বাতিলকে বিদ্যুৎ-জ্বালানি বিভাগের লোক দেখানো মন্তব্য করে প্রকল্প বাতিলসহ দুর্নীতিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত চান সংশ্লিষ্টরা।

অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে বিগত আওয়ামী সরকারের করা বিদ্যুৎ জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ আইন ২০১০ বাতিল করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ। যে আইনের মাধ্যমে বৈধতা দেওয়া হয়েছিল বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের অন্তরালে সীমাহীন লুটপাটকে।

শুধু ক্যাপাসিটি চার্জের নামেই লোপাট হয়েছে দেড় লাখ কোটি টাকা। আর অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে দুর্নীতির দায় জনগণের ওপর চাপানো হয়েছে দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে। তবে, পুরোনো আইন বাতিল হলেও প্রশ্ন রয়ে গেছে নতুন অধ্যাদেশ নিয়ে।

বিদ্যুৎ জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ আইন ২০১০ বাতিল করে রাষ্ট্রপতির রহিতকরণ অধ্যাদেশ ২০২৪ এ বলা হয়েছে, এ আইনের আওতায় সম্পাদিত চুক্তি বা তার অধীনে নেয়া কর্যক্রম বৈধ বলে বলে গণ্য হবে।

এমনকি এ আইনের আওতায় সম্পাদিত চুক্তির অধীনে চলমান কার্যক্রম এমনভাবে পরিচালিত হবে, যেন মনে হয় আইন রহিত করা হয়নি। যদিও সরকার জনস্বার্থে অধ্যাদেশের অধীনে চলমান প্রকল্প ও কার্যক্রমের বিষয়ে যেকোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে।

অধ্যাদেশের মাধ্যমে পুরোনো সিন্ডিকেটকে নতুন করে সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, ‘আগের আইন বাতিল করে যে নতুন অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে তাতে সুরক্ষার যে জায়গা বা দায় মুক্তি দিয়ে যাদের স্বার্থ সুরক্ষা করা হয়েছিল সেই স্বার্থ সুরক্ষার ব্যাপারটা খুব শক্তভাবে এই সরকার করলো।’

কোনো প্রশ্নের সুযোগ না রাখার সুযোগে দ্রুত সরবরাহ আইনের ফাঁক গলে বসানো হয়েছে পুরোনো পাওয়ার প্ল্যান্ট, ব্যয় ধরা হয়েছে অতিরিক্ত। হাসিনা সরকারের পতন হলেও বহাল থাকা এসব প্রকল্প নির্মাণকারী কোম্পানির মালিক ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় না আনলে বিদ্যুৎ খাত সিন্ডিকেটমুক্ত হবে না বলে মনে করছেন পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বিডি রহমতুল্লাহ।

বিডি রহমতুল্লাহ বলেন, হাই প্রাইস ও হাই কস্টিংয়ে নিম্ন মানের যন্ত্র বসাচ্ছে। এই টাকা কে আদায় করবে। প্রকল্প নির্মাণকারী কোম্পানির মালিক ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় না আনলে বিদ্যুৎ খাত সিন্ডিকেটমুক্ত হবে না।’

দেশে এ পর্যন্ত এক দিনে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে সাড়ে ষোল হাজার মেগাওয়াট। আর গড় চাহিদা ১২ থেকে ১৪ মেগাওয়াটের মধ্যে। এ অবস্থায় ৩০ হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতা নিয়ে পুরোনো আইনে করা বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধ করলেও রাষ্ট্রের কোনো ক্ষতি হবে না বলে মত বিদ্যুৎ খাত সংশ্লিষ্টদের।

ইএ