জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণায় তরুণদের প্রাধান্য দেয়ার কারণ কী?

জামায়াতে ইসলামীর লোগো
জামায়াতে ইসলামীর লোগো | ছবি: জামায়াত
0

আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে এরই মধ্যে ৩০০ আসনে প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। যাদের বেশিরভাগই তরুণ, রয়েছে ছাত্রশিবিরের দুই ডজনেরও বেশি সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি। জুলাই পরবর্তী সময়ে তরুণদের এমন গুরুত্ব জামায়াতের কৌশল কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, উদার রাজনৈতিক চিন্তা এবং ইনক্লুসিভ আইডিয়া থেকেই তরুণদের বেছে নিচ্ছে দলটি।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নানান চড়াই উতরাই পেরিয়ে ইতিহাসের সেরা সময় পার করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বিগত ১৬ বছরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে দলের শীর্ষ ১১ নেতার মৃত্যুদণ্ডসহ নানা দমন পীড়নের পথ পেরিয়ে জুলাই গণ অভ্যুত্থানের পর, নতুন উদ্যোমেই এগিয়ে যাচ্ছে দলটি। ৫ দফা দাবিতে রাজপথে সরব থাকলেও ইতিমধ্যে ভোটের মাঠেও পিছিয়ে নেই কোনভাবে। এরই মধ্যে, ৩০০ আসনে প্রার্থীও চূড়ান্ত করেছে দলটি।

সাম্প্রতিক সময়ে ডাকসু, জাকসুসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদে শিবির প্যানেলের জয়ে জাতীয় নির্বাচন ঘিরেও আরও আত্মবিশ্বাস বেড়েছে জামায়াতের। আর এরই ধারাবাহিকতায়, আসন্ন নির্বাচনে লড়াইয়ের মাঠে সামনে আনা হচ্ছে তরুণ নেতৃত্ব। প্রার্থী তালিকায় তাই দুই ডজনের বেশি রয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতিরা।

ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি আতিকুর রহমান বলেন, যুবকদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ এবার প্রথমবার ভোট দেবেন। যারা আগে ভোটার হলেও নির্বাচন সেভাবে না হওয়ায় তারা ভোট দেয়ার সুযোগ পান নাই। আমরা মনে করি জামায়াত ইসলামী এবার যুব সমাজকে আকৃষ্ট করার জন্য যেসব যুবক পার্লামেন্টে গিয়ে কথা বলতে পারে সেদিকটা অগ্রাধিকার দিয়েছে।

নির্বাচন গুলো সুষ্ঠু হয়নি অভিযোগ করে বলেন, তরুণদের একটি উল্লেখযোগ্য একটি অংশ এবার ভোট দিবে ফলে ভোটে তরুণদের আকৃষ্ট করতেই জামায়াতের এই অভিনব উদ্যোগ

তরুণদের অনেকেই মনে করছেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী অবস্থান থেকেই তরুণদের গুরুত্ব দিচ্ছে জামায়াত। এছাড়া, সবশেষ উপজেলা নির্বাচনে সফলতাকেও প্রার্থী হিসেবে তরুণ প্রার্থীদের বাছাইয়ে ভূমিকা রাখছে। তারা মনে করছে, ধমকের রাজনীতির বদলে নতুন কিছুকেই স্বাগত জানাবেন ভোটাররা।

আরও পড়ুন:

ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর আমরা যে ভারতীয় আধিপত্যবাদের মধ্যে ছিলাম, বাংলাদেশে আর কখনোই আমাদের পাশের কোনো দেশ যেন আমাদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে। তরুণদের হাত ধরেই আগামী দিনের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসবে ইনশাআল্লাহ।

ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, যে পুরাতন রাজনীতিকে সবাই না বলে দিচ্ছে। আমি জানি না আমাদের রাজনীতিবিদরা এটা বুঝতে পারছেন কি না। আপনি যেনতেন একটি ন্যারেটিভ তৈরি করলেই কিন্তু মেনে নিচ্ছে না।

তবে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক এড়াতে তরুণ নেতৃত্বকে সামনে আনা জামায়াতের কোশল কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে উদার রাজনৈতিক চিন্তাকেই গুরুত্ব দিচ্ছে দল। বলেন, তরুণরা নির্বাচিত হলে রাষ্ট্র পরিচালনার ভার সামলাতে বেগ পেতে হবে না।

গোলাম পরওয়ার বলেন, আসনগুলোতে এ পর্যন্ত প্রার্থী বাছাই যা করেছি তার মধ্যে আমাদের তরুণ প্রার্থী উল্লেখযোগ্য। সাবেক সব ছাত্রনেতারা রয়েছেন। এটা অনেকটা ইনক্লুসিভ আইডিয়া জামায়াতকে খানিকটা উদার রাজনৈতিক চিন্তা থেকে রাষ্ট্র পরিচালনার এ দায় কাঁধে আসলে আমরা কিভাবে সক্ষম এবং দক্ষ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রটাকে নতুন বাংলাদেশ পরিচালনায় যোগ্য বানাবো সে ধরনের লিডারশীপ কিন্তু আমরা এখনই বাছাই করছি।

প্রার্থীদের দক্ষতা-যোগ্যতার পাশাপাশি ইনক্লুসিভ ধারনা থেকে তরুণদের গুরুত্ব দেয়ার কথা জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল।

ইএ