৫ আগস্টের পর থানা থেকে হারিয়েছে অপরাধের বেশিরভাগ তথ্য, ধরাছোঁয়ার বাইরে অপরাধীরা

0

রাজধানীর বেশিরভাগ থানায় নেই এলাকাভিত্তিক অপরাধীদের তথ্য। এই তালিকা না থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই তদন্ত কর্মকর্তাদের পড়তে হচ্ছে বিপাকে। আর এই সুযোগে ধরাছোঁয়ার বাইরে চিহ্নিত অপরাধীরা। পুলিশ বলছে, ৫ আগস্টের পর থানা থেকে হারিয়ে গেছে বেশিরভাগ অপরাধের তথ্য।

রাত ২.৩৫। গাড়ি থেকে নামতে দেখা গেল এক ব্যক্তিকে। মিরপুরের শিমুল তলার সামনের সড়ক পার হয়ে বাড়ির পথে যাচ্ছিলেন তিনি। হুট করেই ২ জন ব্যক্তির এলোপাথাড়ি কোপ।

৪০ সেকেন্ড এলোপাথাড়ি কুপিয়ে সটকে পড়ে ঘটনাস্থল থেকে। এরপর পার হয়েছে এক মাসের বেশি সময়। অথচ অপরাধীরা ধড়াছোয়ার বাইরে।

কি বলছে পুলিশ দেখতে দারুছালাম থানায় আমরা। জানা গেল এই থানায় নেই কোন অপরাধীর তথ্য। কে হামলা করেছে আসাদুজ্জামানকে নেই সেই অভিযোগের কোন অগ্রগতি।

এবারে আসা যাক আরেকটি ঘটনায়। এলিফেন্ড রোডের মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে ১ ব্যক্তিকে কোপাচ্ছে ১৫ থেকে ২০ জন মিলে। অভিযোগ রয়েছে পানি, ইন্টারনেট ও ময়লার ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে এই হামলা । অবশ্য এই ঘটনায় উঠে আসে কয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম।

কি বলছে থানা?

অন্য থানাগুলোর অবস্থা কি একটু জেনে আসা যাক।

উত্তরা পশ্চিম থানায় নেই কোনো অপরাধীর তালিকা। অভিযোগ নিয়ে থানায় আসাদের অধিকাংশই ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন।

সেরেস্তার রুমে গিয়েও পাওয়া গেল না অপরাধীদের কোনো তালিকা।

এবার গন্তব্য উত্তরা পূর্ব থানায়। চিত্র ঠিক একই।

শুধু এই থানা গুলো নয় রাজধানীর অধিকাংশ থানায় খুঁজে পাওয়া যায়নি শীর্ষ সন্ত্রাসী, রেড অ্যালার্ট ভুক্ত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, কিশোর গ্যাং, মাদক ব্যবসায়ী, ছিনতাইকারীর তালিকা।

ডিএমপি বলছে তারা অন-লাইনের মাধ্যমে এটি সংরক্ষণ করেন।

ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম বলেন, ‘বর্তমানে আমরা একটা সফটওয়্যারের মাধ্যমে এইগুলো সংরক্ষণ করছি। এইটার সুবিধা সে যদি আগে কোনো অপরাধ করে থাকে তাহলে তার সব তথ্য চলে আসে।’

অপরাধ শনাক্তের অন্যতম হাতিয়ার এলাকাভিত্তিক অপরাধীদের তালিকা বলছে অপরাধ বিশ্লেষকরা। পুলিশের কাছে সঠিক তালিকা না থাকলে অপরাধীরা অপরাধ করে পার পেয়ে যায় বলেও মত তাদের।

অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, ‘যারা অপরাধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগের ধারা সেই কার্যক্রম খুব জোড়ালোভাবে হওয়া উচিত। এই যে থানাগুলো তালিকা না থাকা আবার থাকলেও সেটা প্রকাশ না করা। এইগুলোতে ঢিলে করা অপরাধীদের অপরাধ করাতে প্রভাবিত করে।’

দ্রুত হালনাগাদ তালিকা তৈরি না করলে কিশোর গ্যাং, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের থামানো কঠিন হবে বলে মন্তব্য অপরাধ বিশ্লেষকদের।

ইএ