সরকারি হাসপাতালের আশপাশ ঘিরে রমরমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ওষুধের ব্যবসা। এরমধ্যেই মানহীন প্রতিষ্ঠানগুলোর ভুল রিপোর্টে তৈরি হচ্ছে চরম আস্থার সংকট। যে কারণে অনেকেই ছুটছেন ভিনদেশে। গবেষণা তথ্য বলছে তারপরও ২০২৭ সালের মধ্যে ১৮০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে বাংলাদেশের ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির বাজার।
সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত রোগ নির্ণয়ের সুযোগ না থাকায় রোগীদের ছুটতে হয় বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। তাহলে প্রশ্ন- বেসরকারি এসব প্রতিষ্ঠান শত শত পরীক্ষা করাতে সক্ষম হলেও সরকারি হাসপাতালগুলোর কেন এত রুগ্ণ দশা?
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘প্রেসক্রিপশন, রোগী ভর্তি, বেড, ফ্লোরে থাকা, অপারেশন এই লেভেল পর্যন্ত আছে। তারপর পরবর্তী ধাপে চিকিৎসা ও টেকনিক্যাল সেবা রোগীর কাছে বিনামূল্যে পৌঁছানোর পরীক্ষা নিরীক্ষা ও ওষুধ আমাদের বিবেচনায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় মৌলিক কাঠামো।’
২০১৩ সালে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্টদের মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়। এ মামলা নিষ্পত্তি হলেও দীর্ঘদিনেও আলোর মুখ দেখেনি নিয়োগ প্রক্রিয়া। যে কারণে দেশে মোট রোগীর ৫ শতাংশেরও সেবা নিশ্চিত করতে পারছে না সরকারি হাসপাতালগুলো।
বৈষম্যবিরোধী জাতীয় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদের মহাসচিব মো. রিপন শিকদার বলেন, ‘অন্তত ১ লাখ ৫০ হাজার মেডিকেল টেকনোলজিস্ট থাকার কথা আছে মাত্র ৮ হাজারের মতো। সরকার ও বেসরকারি সেক্টরের কারণে এই নিয়োগগুলো হচ্ছে না।’
আধুনিক চিকিৎসা রোগ নির্ণয়ের উপরই নির্ভরশীল। যদিও এখাতে মানসম্পন্ন জনবল তৈরিতে নেই উদ্যোগ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বরাবরই টেস্ট বাণিজ্যে বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। লাভজনক এ খাত ঢেলে সাজাতে জরুরি ভিত্তিতে টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দিলে সরকারের প্রতিমাসে রাজস্ব আয় হবে শত কোটি টাকা।
বৈষম্যবিরোধী জাতীয় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদের সভাপতি মো. আব্দুস সামাদ বলেন, ‘৪০ হাজার টেকনোলজিস্ট সরকার এই মুহূর্তে নিয়োগ দেই তাহলে সরকারের মাসিক বেতন হবে মাত্র ৮ কোটি টাকা আর সেখানে সরকার রাজস্ব আয় করবে প্রতিমাসে ১৫০০ কোটি টাকা।’
দ্রুত নিয়োগ জটিলতা নিরসনসহ স্বাস্থ্যখাত ঢেলে সাজাতে কাজ চলমান রয়েছে বলে জানালেন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘শূন্যপদ চিহ্নিত করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’
২২ বছরের বেশি সময় ধরে আটকে আছে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ফার্মাসিস্ট ও মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টদের পদমর্যাদা ও বেতন স্কেল বৃদ্ধির প্রক্রিয়া। এরই মধ্যে টেকনোলজিস্টদের চাকরি ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করছে সরকার।