শরীয়তপুরের ১০১ মণ্ডপে শেষ মুহূর্তের সাজে ব্যস্ত পূজামণ্ডপ

মণ্ডপ সাজাতে ব্যস্ত শিল্পীরা
মণ্ডপ সাজাতে ব্যস্ত শিল্পীরা | ছবি: এখন টিভি
2

দরজায় কড়া নাড়ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আসছে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে এ উৎসব। এ বছর দুর্গোৎসবকে ঘিরে শরীয়তপুরের ১০১ মণ্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রতিমা তৈরির কারখানা আর মণ্ডপে শিল্পিদের রং-তুলির ছোঁয়ায় প্রতিমা হয়ে উঠছে অপরূপ।

একইসঙ্গে দিনরাত মণ্ডপগুলোতে চলছে সাজসজ্জার কাজ। পৌরানিক কাহিনী আর সোনালী ধানের নকশায় মণ্ডপগুলো সাজায় দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বাড়ার আশা আয়োজকদের।

মণ্ডপগুলো ঘুরে দেখা যায়, শরীয়তপুরের মশুরা ঘোষপাড়া রাধাগোবিন্দ পূজা মণ্ডপে চলছে প্রতিমা সাজানোর কাজ। ৬ জন প্রতিমা শিল্পী ৩ মাস ধরে রাত-দিন কাজ করে সাজিয়ে তুলছেন এসব প্রতিমা। চিরাচরিত রংয়ের পরিবর্তে এই মণ্ডপে প্রতিমা সাজাতে বেছে নিয়েছেন সোনালী ধান। 

শিল্পিদের হাতের এমন কারুকার্য সৌন্দর্য বাড়িয়েছে প্রতিমার। সোনালী ধানের রঙে এবার আলাদা আবহ তৈরি করছে এ মণ্ডপের প্রতিমাগুলো। 

ধান দিয়ে কারুকার্য খচিত এমন প্রতিমা হয়ে উঠেছে আকর্ষনীয়। শৈল্পিক এ কাজ করতে পেরে খুশি মৃৎশিল্পী ও আয়োজকরা।

ঘোষপাড়া মণ্ডপের মতো জেলার অন্য মণ্ডপেও চলছে প্রতিমার রং আর সাজসজ্জার কাজ। সনাতন ধর্মের পৌরানিক কাহিনীর বিভিন্ন দৃশ্যপট উপস্থাপন করা হচ্ছে এসব মণ্ডপে। 

আরও পড়ুন:

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রাচীন মহাকাব্য রামায়নের বিভিন্ন চরিত্র নিয়ে প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। মণ্ডপের পাশাপাশি প্রতিমা তৈরির কারখানাগুলোতে মৃৎশিল্পীর ফুরসৎ নেই। ষষ্ঠীর আগেই মণ্ডপগুলোতে পৌঁছাতে হবে এসব প্রতিমা। রাতদিন প্রতিমার রঙের কাজে ব্যস্ত পরিবারের সদস্যরা।

মশুরা ঘোষপাড়া রাধাগোবিন্দ পূজা মণ্ডপের প্রতিমা শিল্পী রাজিব সরদার বলেন, ‘প্রতি বছরে রং তুলিতে প্রতিমা সাজালেও এ বছর ভিন্নতা রয়েছে। বাংলার খাদ্যশষ্য ধান। এ ধানের মর্যাদা সর্বস্তরে। সোনালী রঙে এ ধানের ফলে প্রতিমার সৌন্দর্য্য বেড়েছে কয়েকগুন। আশা করি দর্শনার্থীরা ভিন্ন কিছু পাবেন এই মণ্ডপে।’

কোটাপাড়ায় এবার ২৭টি দুর্গা প্রতিমা বানিয়েছেন শ্যাম পাল। তিনি বলেন, ‘গত বছরের থেকে এবার দু’টি প্রতিমা সেট বেশি বানানো হয়েছে। প্রতিদিনই মণ্ডপগুলোতে প্রতিমা চলে যাচ্ছে। এখন হাতে সময় কম তাই দিনরাত পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিমা তৈরিতে কোনো ধরনের বাধা-বিপত্তি আসেনি।’

ভোজেশ্বরের প্রতিমা শিল্পি শংকর পাল বলেন, ‘মণ্ডপ সাজিয়েছি রামায়নের কাহিনী নিয়ে। রাম ও সীতার বিভিন্ন চরিত্র মাটির প্রতিমাতে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। এখন ডেকোরেশন আর প্রতিমার রঙের কাজ শেষ পর্যায়ে।’

শরীয়তপুর জেলা পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ ঘোষ বলেন, ‘এ বছর দেবী দুর্গা বাপের বাড়ি আসবেন হাতিতে চরে আর পালকিতে চরে যাবেন স্বামীর বাড়ি। ভিন্ন ভিন্ন সাজে আর পৌরানিক কাহিনী নিয়ে এবার মণ্ডপগুলো সেজে উঠছে।’ 

এখনও পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ ভালো থাকায় সুন্দরভাবে দুর্গোৎসব উদযাপিত হবে বলে আশাবাদী পূজা উদযাপন কমিটি।

এসএইচ