সংঘর্ষের সময় ওয়াপদা মোড়ের পাশে হারুণ শপিং কমপ্লেক্সে বিএনপির একটি পক্ষের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। আগুন দেয়া হয় ওই শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থাকা অন্তত ১০টি মোটরসাইকেলে। এছাড়া আশপাশের দোকানগুলোতে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।
বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপি কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক শামসুদ্দীন মিয়া ঝুনুর নেতৃত্বে বিভক্ত। এ দুই নেতাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বোয়ালমারী আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে দল এ আসনে দলীয় মনোনয়ন স্থগিত করে রেখেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ৩টার দিকে শামসুদ্দীন মিয়ার সমর্থকরা ওয়াপদার মোড় এলাকায় এবং নাসিরুলের সমর্থকরা প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজ মোড়ে সমবেত হতে শুরু করেন।
তারা জানান, বিকেল ৪টার দিকে নাসিরুলের পক্ষের লোকজন মিছিল নিয়ে ওয়াপদার মোড় এলাকার দিকে এগুতে থাকে। ওই সময় শামসুদ্দীনের সমর্থকরা কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের দিকে এগুতে থাকে। দুপক্ষই বোয়ালমারী পৌরসভার সামনে এলে তারা একে অপরের দিকে ইট নিক্ষেপ করতে শুরু করে। তবে নাসিরুলের সমর্থকরা সংখ্যায় বেশি হওয়ায় শামসুদ্দীনের সমর্থকরা পিছুহটে ওয়াপদার মোড়ে হারুণ শপিং কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থান নেন।
ওই সময় বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী, সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো. শিব্বির আহমেদ ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান দুই পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয় বলেও জানান তারা।
আরও পড়ুন:
বিকেল ৫টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষের সময় পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি থাকলেও তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। এসময় দমকল বাহিনীর একটি গাড়িও আগুন নেভাতে এসে হামলার শিকার হয়।
শামসুদ্দীন মিয়া বলেন, ‘প্রশাসনকে জানিয়ে আমরা ওয়াপদা মোড়ে অনুষ্ঠান করছিলাম। এসময় নাসিরুলের লোকজন আওয়ামী লীগের লোকদের সঙ্গে নিয়ে অতর্কিতে আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা ১০টি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে আমার কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে। এ ঘটনায় আমার ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছে। কার্যালয়ে থাকা বেগম খালেদা জিয়ার ছবি ভাঙচুর করেছে।’
খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ছিলাম মধুখালী। আমাদের লোকজনদের ওপর হামলা করেছে। একজনকে কুপিয়ে জখম করে। ওরা হারুন শপিং কমপ্লেক্সের ওপরে উঠে আমার সমর্থদের ইট ছুড়ে মারলে কয়েকজন আহত হন। এতে জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শপিং কমপ্লেক্সে হামলা করে।’
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে সোনাবাহিনীর সদস্যরা এসে অবস্থান নেন। সেনাবাহিনী আসার পর দমকল বাহিনী পুনরায় ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভায়। তবে সেনাবাহিনী থাকার পরও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার পরিস্থিতি বিরাজ করতে দেখা যায়।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ভাঙচুর ও অগ্নিংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এসময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। তবে পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’





