রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘নব্য ফ্যাসিবাদীদের প্রতিহত করতে জাতি অতীতের মতোই প্রস্তুত আছে। দেশ কারও বাপের নয়, কোনো পরিবারের নয়। এ দেশ ১৮ কোটি জনগণের। জনগণ যাকেই ভোট দেবে জামায়াতে ইসলামীর আপত্তি নাই। কোনো দল যদি নিজেদেরকে দেশের মালিক মনে করে থাকে তবে তাদের উচিত হবে ডাকসু, জাকসু, চাকসু, রাকসু থেকে শিক্ষা নেয়া। সবেমাত্র ছাত্ররা ভোটের মাধ্যমে বয়কট শুরু করছে। জনগণও সুযোগ পেলে নব্য ফ্যাসিবাদীদের ভোটের মাধ্যমে বয়কট করে ইসলামের পক্ষে এক নিরব বিপ্লব ঘটাবে।’
এসময় তিনি প্রশাসন ও উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলেন, ‘দলবাজি করতে চাইলে রাজপথে নেমে আসুন।’
অতীতে দলকানা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পরিণতি থেকে শিক্ষা নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি প্রশাসনের সকল পর্যায়ের দায়িত্বরতদের নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেন।
জাতির কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে উল্লেখ করে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জাতির সামনে ওয়াদা করেছেন এ সরকারের কাজ হবে সকল গণহত্যার বিচার এবং রাষ্ট্রের সংস্কার শেষে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে উপহার দেয়া। কিন্তু সরকার তার প্রতিশ্রুতির কোনোটিই এখন বাস্তবায়ন করতে পারেনি। একটি দলের প্রতি আনুগত্যশীল হয়ে সরকার কেবল নির্বাচনের কথাই বলছে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচন, অবাধ-সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য সর্বস্তরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে বিচারের মুখোমুখি করা গণমানুষের দাবি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু সরকার গণমানুষের এ পাঁচ দফা দাবির প্রতি অমনোযোগী। অনতিবিলম্বে পাঁচ দফা দাবি মেনে নিতে হবে।’
আরও পড়ুন:
জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোটের সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার প্রতিযোগিতায় কোনো দল সংঘর্ষে জড়ালে কিংবা ভোট কারচুপি হলে গণভোটও বিতর্কিত হবে। তাই নভেম্বরের মধ্যে গণভোট সম্পন্ন করে ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘প্রশাসনে দলীয়করণ বন্ধ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন করা সম্ভব নয়। সরকার যদি কোনো প্রহসনের নির্বাচন করতে চায় তবে জাতি সেই নির্বাচন মেনে নেবে না। সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা একটি দলের অনুগত হওয়ার ফলে প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরছে না। এতে অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে জনমনে সংশয় তৈরি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এ সংশয় সরকারের নিরপেক্ষতা প্রমাণের মাধ্যমেই কাটতে পারে। সরকারের নিরপেক্ষতা প্রমাণের জন্য অবশ্যই প্রশাসনে দলীয়করণ বন্ধ করতে হবে, সর্বস্তরের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। নোয়াখালীতে মসজিদে দারসুল কুরআন ক্লাসে একটি দলের পদধারী চিহ্নিত নেতারা হামলা চালানোর ঘটনায় প্রমাণ হয় সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই।’
তিনি ওই হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অনতিবিলম্বে ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেইট থেকে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বিজয় নগর হয়ে কাকরাইল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এসময় কয়েক হাজার দলীয় নেতাকর্মী মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।





