ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরে সবচেয়ে আলোচিত হচ্ছে লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সাথে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠককে ঘিরে। বিদেশের মাটিতে শীর্ষ দুই নেতার বৈঠককে কেন্দ্র করে কেন এত আলোচনা? সে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলামের কাছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বা আমি যদি আরো স্পষ্ট করে বলি তারেক জিয়ার সমর্থন ও সহযোগিতা ছাড়া আসলে কোনো সিদ্ধান্ত বিএনপির পক্ষে বাস্তবায়ন বা নেয়া সম্ভব না। ফলে আগামীতে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে একটা সংস্কার বাস্তবায়ন ও আরেকটা নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন। সেই বিচারে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যেই উত্তাপ ও অস্থিরতা আছে তা কমিয়ে একটা স্থিতিশীল অবস্থায় নিতে পারবে বলে আমার কাছে মনে হয়।’
কাজী মারুফুল ইসলাম এই বৈঠককে চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কমানো ও স্থিতিশীল জায়গায় নিয়ে আসার উদ্যোগ হিসেবে ব্যাখ্যা যেমন করছেন তেমনি এ অধ্যাপক এটিও মনে করছেন, নির্বাচন নিয়ে সরকার ও বিএনপির মধ্যে যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে এ নিয়ে বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন না করলে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে যে রূপান্তরের কথা আলোচনা হচ্ছে তা বিঘ্নিত হবে।
কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, ‘আগামী যে নির্বাচন আসছে সেখানে বিএনপির সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ দরকার। এই নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রতিটা পর্যায়ে এই রাজনৈতিকদলকে অংশগ্রহণ দরকার।’
আর বৈঠক ঘিরে যখন জাতীয় রাজনীতিতে তুমুল আলোচনা তখন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার আগ্রহেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দুই নেতার আলোচনায় জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলো নিষ্পত্তি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা যেসমস্ত বিষয়গুলো আলাপ করতে চাইবেন ও আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমাদের নেতা তারেক রহমান যেসব আলোচনা করবেন তা অবশ্যই জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যু নিয়েই আলোচনা হবে।’
তবে বৈঠকে অন্যান্য আলোচনা ছাপিয়ে নির্বাচনের সময় নির্ধারণই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে বলেও জানান বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এ নেতা।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। সেটা আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে আগেও বুঝিয়েছি। যেহেতু সংস্কার ও বিচার কোনো সমস্যা নয়। চলমান প্রক্রিয়া। এইগুলো চলবে। সুতরাং আর কোনো অজুহাতে ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন পিছানোর কোনো কারণ দেখছি না আমরা।’
ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক দেশের রাজনীতির ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে মনে করছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা।





